লন্ডনে খালেদার সাক্ষাত্ পায়নি কোনো নেতা
Published : Tuesday, 15 August, 2017 at 8:28 PM, Count : 9215

এম. উমর ফারুক : লন্ডনে চিকিত্সাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন। তার ডান চোখের ব্যান্ডেজ আজ খোলা হবে। খালেদা জিয়া লন্ডনে আসার এক মাসেও দলের কোনো সিনিয়র নেতা তার সাক্ষাত্ পাননি। হয়নি কোনো বৈঠকও। তিনি পারিবারিকভাবে সময় কাটাচ্ছেন। তবে দেশের চলমান রাজনীতি ও বিএনপির কর্মকাণ্ড নিয়ে মা ছেলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে লন্ডন সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র মতে, গত ১৫ জুলাই চোখ ও পায়ের চিকিত্সার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। তার যাওয়ার আগে ও পরে দলের সিনিয়র কয়েকজন নেতা লন্ডনে গিয়ে বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান নেন। আগামী নির্বাচনে নিজেদের মনোনয়ন চূড়ান্ত ও দলের কাঙ্ক্ষিত পদ-পদবি পাওয়ার তদবিরের জন্য তারা লন্ডনে যান।

লন্ডন সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান  তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিদ আউয়ালসহ অনেক নেতা লন্ডনে অবস্থান নেন। এর মধ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ শেষে আমেরিকা চলে যান। এরপর থেকে আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তাবিদ আউয়াল বিভিন্নভাবে চেস্টা করলেও খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান তাদের সাক্ষাত্ দেননি। এমনকি তাদের সঙ্গে কোনো নেতার ও বৈঠক হয়নি। মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্যের বিভিন্ন তদবির নিয়ে লন্ডনে যাওয়ার পর প্রাধান্য না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। তবে, তাদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার চালান খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিনিয়র নেতারা। এমনকী তিন সিনিয়র নেতাদের ডেকে পাঠান খালেদা জিয়া। এ নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়। তিন নেতাকে ডেকে পাঠাইছেন খালেদা জিয়া এ বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারনী ফোরামের একাধিক সদস্যের কাছে জানতে চাইলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যাদের কথা পত্রিকায় দেখলাম তাতে মনে হয় বি এন পি দেউলিয়া হয়ে গেছে যে, তাবিদ আউয়ালের সাথে দলের পরামর্শ করে বি এন পি চালাতে হবে। তারা বলেন, চিকিত্সার জন্য লন্ডনে গিয়েও শান্তিতে নেই খালেদা জিয়া।

সূত্রটি জানায়, আগামী নির্বাচনে আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তাবিদ আউয়াল কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন তা অনেকটা অনিশ্চিত। কেননা ফেনী -৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী): আসন থেকে আবদুল আউয়াল মিন্টু নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করলে স্থানীয় বিএনপিসহ সাধারণ জনগণ তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এলাকাবাসী দাবি তোলেন ভাড়া করা কোন প্রার্থীকে এ আসনে মেনে নেয়া হবে না। এ কারনে  ঢাকার যে কোন আসন থেকে নির্বাচন করতে চান বাবা ও ছেলে। কিন্তু কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন তা ঠিক করতেই লন্ডনে যান তারা। 

এদিকে, গত ৮ আগস্ট লন্ডন সময় সন্ধ্যা ৬টায় লন্ডনের মর্নফিল্ড হাসপাতালে খালেদা জিয়ার ডান চোখে সফল অপারেশন করা হয়। বর্তমানে তিনি বাসায় আছেন। দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। তার সুস্থতা কামনা করে লন্ডন স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ব্রিকলেন মসজিদে দোয়া-মিলাদ আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি।

বিএনপি সূত্র জানায়, অস্ত্রোপচারের তিন ঘণ্টা পর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। অস্ত্রোপচার চলাকালে তারেক রহমান ছাড়াও হাসপাতালে ছিলেন জোবায়দা রহমান। চিকিত্সকের পরামর্শে খালেদা জিয়া বর্তমানে বিশ্রামে রয়েছেন।

সূত্রমতে, খালেদা জিয়া সূত্র হলেই ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে দলের অনেক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কেননা আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটাই হতে পারে খালেদা জিয়ার শেষ লন্ডন সফর। মা ছেলের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে সহায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আদায়, নির্বাচনে দল ও জোটের প্রার্থী মনোনয়ন, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির শূন্য পদ পূরণ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে পদায়ন ও  গুরুত্বপূর্ণ জেলা কমিটি গঠন।

লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের বৈঠক এমন প্রচারণায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বলেন, চিকিত্সার জন্য লন্ডনে গিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। বিভিন্ন দেশের লবিং করার দায়িত্ব নিয়ে খালেদা জিয়ার আস্থা অর্জন করে একটি সিন্ডিকেট। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দলের ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে নিজেদের লোকদের পদে বসিয়েছেন। খালেদা জিয়াকেও জনবিচ্ছিন্ন করেছে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঘিরে গড়ে ওঠা ওই সিন্ডিকেটটি। লন্ডনের একটি সুত্র জানায়, কুটনৈতিক লবিংয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বার বার ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের ব্যর্থতার কারন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকী তাদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft