মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
পূজার নিরাপত্তায় সন্তুষ্ট সনাতন ধর্মাবলম্বীরা
Published : Monday, 3 October, 2022 at 6:00 AM, Count : 651

বর্তমান প্রতিবেদক: গত বছরের ত্যাক্ত অভিজ্ঞতার পর এবারও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নানা আশঙ্কার কথা বলা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন মহল থেকে। আজ সোমবার (৩ অক্টোবর) মহাঅষ্টমী। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব। পূজার আয়োজন নিরাপদ রাখতে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সনাতন ধর্মের নেতারা আশা করছেন, এবার শান্তিপূর্ণভাবেই উৎসব উদযাপন আয়োজন সম্পন্ন হবে।

পূজা উদযাপনের বিভিন্ন দিক জানাতে গিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতারা। সেই শঙ্কার বিষয়টিও উঠে এসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যে। বলা হয়, পূজা মণ্ডপকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করতে সুযোগ খুঁজছে একটি চক্র। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এড়াতে তৎপর রয়েছে বলেও আশ্বস্ত করা হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ানো হয় নজরদারি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার কিংবা গুজব প্রতিরোধে বেড়েছে সাইবার মনিটরিং। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন ধরনের হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনার বিচার না হওয়ায় একটি চক্র সবসময় অপতৎপরতার চেষ্টা চালায়। তবে এবছর সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকেই প্রতিমা নির্মাণ থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত আগেভাগেই নিরাপত্তার বিষয় সম্পর্কে পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্থানীয় নেতারা সাথে একাধিকবার বৈঠক করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নির্বিঘ্নে এবং কোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজা উদযাপন করতে পারছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছে পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায়। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই সবাই পূজা মণ্ডপে ঢুকছেন। স্বেচ্ছাসেবকরাও নিয়োজিত রয়েছেন। মণ্ডপ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ২৪ ঘণ্টা পালা করে দায়িত্ব পালন করছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ও স্বেচ্ছাসেবকরা। একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তারা বলছেন, নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও ছাড় নয়। কেউ যেন কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরির সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এবছর দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার শঙ্কা থাকলেও সেসব বিষয় বিবেচনা করে নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ সদস্য এবং আনসার সদস্যরা ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব পালন করছেন। কোনোভাবেই যেন নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি না হয় সেসব বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। পূজা মণ্ডপের দায়িত্ব পালনের যারা নিয়োজিত রয়েছেন, তারা যেন পূজামণ্ডপের নজরদারির বাইরে না থাকেন; সেসব বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে। পূজা মণ্ডপের সংখ্যার ভিত্তিতে থানাভিত্তিক মোবাইল টিমও কাজ করছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

কেউ কোনোধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার কিংবা অপতৎপরতার পাঁয়তারার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারলে ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়ে এ বিষয়টি অবহিত করার পরামর্শ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত দুদিন সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা স্বাচ্ছন্দে এবং কোন সংখ্যা ছাড়াই পূজা উদযাপন করেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, এ বছর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমরা আমাদের নিজেদের স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রেখেছি। পূজা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও ঘাটতি আমরা দেখছি না। আজ পূজার তৃতীয় দিন অষ্টমী। বিসর্জন পর্যন্ত কোনোধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ ছাড়াই পূজা উদযাপন করতে পারবো বলে মনে করছি।

জঙ্গি হামলার শঙ্কা কতটুকু শঙ্কায় ফেলেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও শঙ্কা বোধ করছি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশ সক্রিয় রয়েছে।’ ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পূজার নিরাপত্তায় আমি সন্তুষ্ট। সারাদেশের পূজামণ্ডপগুলোতেও খোঁজ নিয়ে কোনও বিশৃঙ্খলার খবর পাইনি। সে হিসেবে সরকারের পদক্ষেপ বেশ কাজে দিয়েছে। এজন্য আমি সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।’

পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন্স) হায়দার আলী খান বলেন, ‘কোনোধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই যেন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য পুলিশ সদস্যের প্রত্যেক সদস্যকে সে অনুযায়ী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত তদারকি করছেন। সব ধরনের শঙ্কা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিকল্পনা করা হয়েছে। কেউ কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার ঘটানোর সুযোগ পাবে না বলেও জানান তিনি।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : [email protected], [email protected]
Developed & Maintainance by i2soft