শিরোনাম: |
বাংলাদেশ সংঘাত চায় না : প্রধানমন্ত্রী
|
![]() প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ একটি শান্তিপূর্ণ টেকসই পরিবেশ জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে সহায়ক এবং সকলকে এটি মনে রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আলোচনার মাধ্যমে সব বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ যে কাজটি ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে করেছে। তিনি বলেন, ‘এখন কেন এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা (চলছে), অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে না কেন? এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য হাজার হাজার শিশু ও নারী বিশ্বজুড়ে অমানবিক জীবনযাপন করছে। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ ১০ লাখের বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, যারা নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছিল যা তাকে ১৯৭১ সালের পরিস্থিতি স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসুক, (পৃথিবীতে) কোন ধরনের অশান্তি থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। ‘প্রতি মুহূর্তে আমাদের তাদের (স্বাধীনতা বিরোধীদের) বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন, সারাজীবন শান্তির বাণী প্রচার করেছেন, কিন্তু তাকে জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে। ‘আমাদের কী দুর্ভাগ্য, যে মানুষটি সারাজীবন শান্তির কথা বলেছেন তাঁকে তার জীবন দিতে হয়েছিল’- একথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আজ তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই, তবে আমরা চাই যে তাঁর দেশ উন্নত এবং সমৃদ্ধ হিসাবে গড়ে উঠুক। দেশে-বিদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করছেন তাদের স্বীকৃতি দিতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শান্তি পুরস্কার’ প্রবর্তনেরও ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কারণ আমরা শান্তি চাই এবং আমরা অবশ্যই শান্তির পথে এগিয়ে যাবো। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং মূল বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও গবেষক মোনায়েম সরকার। মূল বক্তব্যের উপর আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও বিশিষ্ট লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু। শুরুতেই বঙ্গবন্ধু ও তাঁর জুলিও-কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও-কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট ও প্রথম দিনের কভার উন্মোচন করেন। তিনি দিবসটি উপলক্ষে একটি স্যুভেনির প্রকাশনার প্রচ্ছদও উন্মোচন করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও-কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। ফিদেল কাস্ত্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভাদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জরহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং এবং লিওনিদ ব্রেজনেভের মতো বিশ্ব নেতারা এই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ‘জনগণই শক্তি, জনগণই শক্তির উৎস’- বঙ্গবন্ধুর এই উক্তি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সেই বিশ্বাসে বিশ্বাসী এবং সেই বিশ্বাস নিয়েই আমার পথচলা।’ বাংলাদেশ আজ বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষায় অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করছে- উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এক নম্বর দেশ হিসেবে আমরা বিশ্বজুড়ে শান্তি বজায় রাখছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ, সব সময় শান্তিতে বিশ্বাস করি। আমরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাই।’ তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ শতাংশ। কিন্তু আজ সরকার তা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। যেখানে দারিদ্রের সংখ্যা ছিল ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ, তা আজ ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইনশাআল্লাহ, এদেশে কোনো মানুষ দরিদ্র, গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষ অন্তত তাদের মৌলিক অধিকার- খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান পাবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’ |