শিরোনাম: |
দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে আশা জোগাচ্ছে নিউ হোপ লিউহো
|
![]() এছাড়াও মহামারী কোভিট সময়কালে হাসপাতালে চিকিৎসা ডিভাইস, মাস্ক এবং ঔষধ দান ও স্কুলগুলোর জন্য সহায়তা প্রদান করেছেন বলেও জানান।তিনি বলেন আমি পনের বছর ধরে বাংলাদেশে আছি।সত্যি কথা বলতে কি, বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় শহর এবং আমি প্রায় একজন বাংলাদেশী।তার ভিত্তিতে আমি মনে করি বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটি আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে তাহলো বাংলাদেশে প্রজননে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ।ইন্দোনেশিয়া এবং অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় অনেক মানুষের মুরগির ঘর বা প্রজনন পরিস্থিতি এখনও পশ্চাদপদ।এই পশ্চাৎপদতা রোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনায় অসুবিধা সৃষ্টি করবে।এই দিকটিকে আমাদের আরও উন্নত করতে হবে।তাঁর মতে,২০২৩ বার্ড ফ্লু এর মতোই একবার এলে কৃষকদের পক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন।যাইহোক চীন বা অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর মুরগির খামারগুলোতে ফ্লু নিয়ন্ত্রণে অনেক শক্তিশালী ক্ষমতা রয়েছে।বাংলাদেশের বর্তমান প্রজনন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আরও কঠিন করে তুলেছে।আমরা অনেক পদ্ধতি চিন্তা করেছি এবং আমাদের চারটি কোম্পানি থেকে কয়েক ডজন পশু চিকিৎসককে ফ্রন্ট লাইনে পাঠিয়েছি।তা সত্বেও আমরা এখনও কৃষকদের দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত সমস্যা বা ঝুঁকির সমাধান করতে পারিনি।এটি প্রথম সমস্যা।দ্বিতীয়ত, আমরা সম্প্রতি কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি।মার্কিন ডলারে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রা তুলনামূলকভাবে আটসাট এবং আমরা এখনও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা রয়েছে।যখন আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামাল কেনার কথা আসে তখন আমাদের নিউ হোপের একটি সুস্পষ্ট সুবিধা রয়েছে।কিন্তু মার্কিন ডলার ছাড়াই (ব্যক্তিগত কাঁচামাল) শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে কেনা যায় এবং দাম বাড়াতে হবে।তাই খরচ হবে উর্ধহারে।আর তৃতীয় দিকটি হলো গত দুই বছরে নির্দিষ্ট কিছু এলাকা ও ব্যক্তিগত পণ্যে কিছু লোকসান হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ তাদের পুঁজি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।কিছু অসুবিধা আছে তাই এই ক্ষেত্রে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ।তিনি উল্লেখ করেন, নিউ হোপ গ্ৰাহকদের অর্থায়ন এবং কিছু তহবিল দিয়ে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে।আর্থিকভাবে সহায়তাসহ গ্ৰাহকদের ভালোভাবে মুরগি লালন-পালন করতে সহায়তা করুন যাতে তারা ক্ষতি কমাতে পারে। অন্যদিকে তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালে নিউ হোপ বাংলাদেশে আসার পর থেকে আমরা আমাদের কিছু ট্যাক্সসহ ব্যবস্থাপনা এবং প্রয়োজনীয়তার জন্য বাংলাদেশের আইন ও প্রবিধানগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করছি।আমরা আন্তর্জাতিক কর আইন ব্যবস্থার সাথে সম্পূর্ণরূপে অডিট পরিচালনা করি।আমাদের (বাংলাদেশ) পশুপালন ব্যবস্থা, বিশেষ করে পশুপালন ব্যুরো আমাদের সাহায্য করার জন্য আমাদেরকে প্রচুর প্রশিক্ষণ এবং নির্দেশনা দিয়েছে, যা আমাদের নিজেদেরকে এবং সমগ্ৰ শিল্পকে কঠোরভাবে আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করার অনুমতি দিয়েছে।দেশে যাতে আমরা দীর্ঘমেয়াদে আরও ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি।তিনি বলেন, আমরা আইন ও প্রবিধান পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকারকে সম্পূর্ণরূপে মেনে চলি। নিউ হোপ বাংলাদেশের প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান সিউয়ান লি(Siyuan Li) কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য অবদান তুলে ধরে বলেন,২০০৬ সালে নিউ হোপ বাংলাদেশে প্রবেশের পর ছয়টি কোম্পানির একটি বৃহৎ শক্তিশালী গ্ৰুপে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা জুড়ে ।আমরা সবসময় কোম্পানির করপোরেট সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে ক্রমাগত প্রোডাক্ট ফর্মুলা আপগ্ৰেড করি,প্রোডাক্ট কোয়ালিটি বিবেচনা করি।কৃষি ও পশুপালন শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।আমাদের শ্লোগান হলো-"চাষীদের লাভ,খাওয়ার জন্য লাভ"।আমরা পণ্যের গুণমানকে জীবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করি।কোম্পানিটি স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নিউ হোপ উৎপাদিত ফিড এবং ডে-ওল্ড চিকস (ডিওসি) পণ্যের নিরাপত্তা এবং গুণমান বাংলাদেশের কৃষিখাতে মানদণ্ড স্থাপন করেছে যা সামগ্ৰিক গুণমানের উন্নতির দিকে পরিচালিত করেছে।নিউ হোপ বাংলাদেশে শিল্পের মান উন্নীতকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।তিনি বলেন, কোম্পানিটি শিল্পের উৎকর্ষের প্রতি তার অঙ্গীকারকে আরও এগিয়ে নিয়ে দেশের অসংখ্য কৃষি পেশাজীবীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।বাংলাদেশে একটি বিস্তৃত মাংস ও খাদ্য কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা যা টেকসই ব্যবসায়িক উন্নয়নের জন্য একটি সমন্বিত শিল্প চেইন গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নিউ হোপ বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধি এবং সহযোগিতার যাত্রা অব্যাহত রেখে গুণমান, নিরাপত্তা এবং ব্যপক শিল্প সম্পৃক্ততা প্রচেষ্টা বাংলাদেশের কৃষি ল্যান্ডস্কোপের গতিপথকে রূপ দিতে প্রস্তুত।নিউ হোপ ফিড মিলের সরবরাহ ও বিপনন বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট চীনা বিশেষজ্ঞ দলের প্রশংসা করে বলেন, তাঁদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও বন্ধুত্বসুলভ আন্তরিকতায় নিউ হোপ এমন একটি জায়গায় পৌছেছে যে,পণ্যের গুণগতমান ও সেবায় আমরা নাম্বার ওয়ান পজিশনে আছি এবং আগামীতেও গ্নোবালী আমরা নাম্বার ওয়ান পজিশনে যাব।ফিড মিলের উপব্যবস্থাপক মোঃ রিয়াদ মিয়া বলেন, বিশ্বের মধ্যে স্বনামধন্য কোম্পানি নিউ হোপের চীনাকর্মীগণ বাংলাদেশের কালচার ও পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে চলেছে।ফলে গবাদিপশু, পোল্ট্রি ও মৎস শিল্পের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে নিউ হোপ অগ্ৰণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।অন্যদিকে নিউ হোপ ফিড মিলের প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মোঃ রাজিবুল হক বলেন, আন্তর্জাতিকমানের শতভাগ বিনিয়োগকারী চীনা কোম্পানি নিউ হোপ সবসময়ই সর্বোচ্চ গুণগতমানের প্রোডাক্ট উৎপাদন, কর্মীদের নিরাপত্তা বিধান ও লক্ষ্য অর্জনে বিশ্বাসী। নিউ হোপ ফিড মিলে রয়েছে একটি কেমিক্যাল ও একটি বায়ো-ল্যাব।কেমিক্যাল ল্যাবে কর্মরত ফয়জার রহমান গণমাধ্যমকে জানান, আমরা ভালো গুণগতমানের কাঁচামাল গ্ৰহণ করার চেষ্টা করি।এই ল্যাবে সারাদিন কাঁচামাল পরীক্ষা করে দেখা হয়, প্রোডাকশন ফিডের গুণমান অক্ষুন্ন আছে কিনা এবং বাজারজাত উপযোগী কিনা।এসব নানা কারণে নিউ হোপ থেকে ভালো মানের ফিড উৎপাদিত হয়ে থাকে।অপরদিকে বেসরকারি সেক্টরে প্রথম স্থাপিত কোম্পানির বায়ো-ল্যাবে কর্মরত রয়েছেন দুইজন চিকিৎসক ও একজন ল্যাব সহকারী।বাংলাদেশের পশু স্বাস্থ্যের উন্নতি,হাঁস-মুরগির রোগ নির্ণয়ের মতো সেবা প্রদান করে বায়ো-ল্যাবটি।ল্যাবে কর্মরত ডা: রাবেয়া সুলতানা সোমা বলেন, খামারীদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ল্যাব টেষ্টসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগের প্রাদুর্ভাব ও দ্রুত প্রতিকারের পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।ফলে উপযুক্ত সেবা পেয়ে তারা লাভবান হচ্ছেন। এমনই ইতিবাচক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন পার্শ্ববর্তী লোহাগাছ এলাকায় অবস্থিত রাফিন পোল্ট্রি ফিডের মালিক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।বর্তমানে তাঁর ফার্মে রয়েছে ৪০ হাজার মুরগি।মুরগি পালন ও প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে রোগ-বালাই প্রতিরোধ সবক্ষেত্রেই তিনি নিউ হোপের সহযোগিতা পেয়ে আসছেন।২০ বছর আগে তিনি নিউ হোপের ডিলারশীপ নেবার পর আশানুরূপ উন্নতি করেছেন।প্রতিমাসে ২০০ টন পণ্য বিক্রিসহ মুরগি ও মুরগির ডিম বিক্রি এবং মুরগির বিষ্টা থেকে উৎপাদিত বায়ো-গ্যাস সরবরাহ করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।আর এটা সম্ভব হয়েছে নিউ হোপ ফিড মিলের কল্যণে।শুধু মোস্তাফিজুর রহমানই নন,ময়মনসিংহের ত্রিশাল অঞ্চলের ডিলার রাশেদ কবির রোহেল ও ভালুকা অঞ্চলের ডিলার মো মাজহারুল ইসলামও তুলে ধরেছেন নিউ হোপের ইতিবাচক দিকগুলো।তাঁদের মতে, ভালো প্রোডাক্ট ও ভালো সার্ভিস দিচ্ছে চীনা কোম্পানি নিউ হোপ।যা দেশি অনেক কোম্পানি থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।এতে একদিকে তাঁরা ব্যাবসায়িক উন্নতি করছেন অপরদিকে পোল্ট্রি ও মাছ চাষীরাও যথেষ্ট লাভের মুখ দেখছেন ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। নিউ হোপ দেশের কৃষিখাতসহ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখে চলেছে তা এইসব সফলতার গল্প থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।চীনা কোম্পানি নিউ হোপ ফিড উৎপাদন, প্রজনন,মাংস পণ্য, আর্থিক বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নের প্রতি জোর দিয়ে আসছে। মার্চ ১৯৯৮-এ সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নিউ হোপ লিউহো কোম্পানি কৃষি ও পশুপালন শিল্পে একটি গতিশীল উদ্যোগ।ইতিমধ্যে বাংলাদেশের কৃষিখাত ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সুনাম অর্জন ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে কোম্পানিটি।একদল নিবেদিত কর্মীবাহিনী নিয়ে ৫০০ টিরও বেশি সহায়ক সংস্থার একটি বিশাল নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে নিউ হোপ লিউহো লেখক: সাংবাদিক, গবেষক ও চলচ্চিত্রকর্মী খোন্দকার এরফান আলী বিপ্লব মিরপুর, ঢাকা। মোবাইলঃ ০১৯২১-০৫১১৪৩ |