শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, বিকাল ৪টার দিকে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সের কিশোরেরা হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজ গেটের সামনে এসে জড়ো হয়। তাদের কারো হাতে ছিল লোহার রড, কারো হাতে হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি এবং দেশীয় অস্ত্র। আতশবাজি, বাইকের হর্ন, গালিগালাজ ও ভয়ভীতির মাধ্যমে নিজেদের গ্যাংয়ের শক্তি প্রদর্শন করে তারা।

কুবির ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য রহমত বিন হানিফ ঘটনার বর্ণনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন। তার পোস্টে উল্লেখ করেন- আজ ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে বিএনসিসির হয়ে ডিউটি করছিলাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পরীক্ষার সময় বাহির থেকে মিছিলের শব্দ শুনতে পেলাম। শব্দ শুনে দ্রুত বাইরে আসলাম। এসে দেখি অনেক ছোট ছোট ছেলে। তাদের বয়স সর্বোচ্চ ১৬ বছর হবে। তাদের অনেকের হাতে রামদা, চুরি, চাপাতি দেখেছি। তারা আতশবাজিও ফোটাচ্ছিল। তাদের কাছে গিয়ে বললাম এখানে পরীক্ষা চলছে এভাবে আওয়াজ করবেন না। তারা আমাকে তাদের অস্ত্রগুলো দেখিয়ে আরও বেশি আওয়াজ করে ছুটে চলল। 

পরীক্ষার জন্য আগত অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক নিরাপত্তার অভাবে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন। একাধিক অভিভাবক বলেন, আমার সন্তান ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছে, আর এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতি দেখে আমরা চিন্তায় পড়ে গেছি। প্রশাসন কী করছে?

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিন ইশরাক মিজার বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কুমিল্লা শহরে কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডব আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলছে। এক্ষেত্রে কুমিল্লার প্রশাসনের নীরবতা এর প্রধান কারণ বলে আমি মনে করি, কেননা এরকম ঘটনা এখন প্রায়ই ঘটছে; কিন্তু প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মাঝে-মধ্যে দুই-একজনকে ধরপাকড় করছে কিন্তু তারা আবার কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে তারা পুরোপুরি নাগালের বাইরে রয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে এ শহর আরও অনিরাপদ হয়ে উঠবে বলে আমি আশঙ্কা করি। শহরের এ সমস্যা নিরসনে আমি দ্রুততম সময়ে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, আমি এ ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করে ৩ জনকে আটক করেছি। অন্যদের আটকে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।