শিরোনাম: |
শীতের সঙ্গী লাউয়াছড়া
|
টিকিট সংগ্রহ করে প্রবেশ করুন উদ্যানে। দেখবেন দুই সারি পুরনো বৃক্ষের নিচ দিয়ে তৈরি একটা পথ। অনেক পর্যটক ঘুরে দেখছেন, চোখে পড়বে আরও অনেক কিছু। ঘন বৃক্ষের ছায়া। বনের পশুপাখির অবাধ বিচরণ। বনের একাংশ দিয়ে এগিয়ে গেছে ঢাকা-সিলেট রেললাইন। বনের নির্দিষ্ট তিন ঘণ্টার ট্রেইল ধরে এগোনোর দশ মিনিট পরই সামনে পড়বে বেশ কয়েকটি মুখ পোড়া হনুমান। চাইলে মনের মাধুরি মিশিয়ে হনুমানের ছবি তুলতে পারেন। গা-ছমছমে পরিবেশে হঠাত্ নড়ে ওঠে বাম পাশের বেতবন। এমন পরিস্থিতিতে থেমে অপেক্ষা করলে চমক হিসেবে কোনো বন্য প্রাণীর সাক্ষাত্ মিলে যায়। সত্যিই তাই! গভীর জঙ্গলের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন খয়েরি রংয়ের মায়া হরিণ। ডানে-বামে চলে গেছে একাধিক সাইড ট্রেইল। বুঝতে পারবেন না সঠিক ট্রেইলে আছেন কি না। ট্রেইল নিয়ে যেতে পারে বনের এক প্রান্তে। সেখানে ছোট্ট একটা ঘর রয়েছে। সেখানে দেখবেন গাছপাকা ডাসা কলা, লেবু গাছের সারি, থোকায় থোকায় লেবু ঝুলছে। ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ুন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতীগোষ্ঠী খাসি (খাসিয়া) পল্লীর দিকে। বনের মধ্যে এই পল্লী ভ্রমণ অন্যতম আকর্ষণের বিষয়। লাউয়াছড়া ভ্রমণে হেন পর্যটক নেই যারা চমত্কার করে সাজানো পল্লীটিতে বেড়াতে যায় না। বনের মাঝদিয়ে বয়ে যাওয়া সরু খালটা পেরিয়ে অল্প খানিকটা গেলেই সাজানো গোছানো খাসি পল্লী। মোটা বাঁশের ফালি দিয়ে আটকানো একেকটি সিড়ি কেটে ওপরে উঠলেই ছবির মতো সাজানো প্রতিটি বাড়ি। বসতির মাঝদিয়ে এমনভাবে পথ ও সিঁড়ি বানানো যে, এক পাশ দিয়ে প্রবেশ করে অন্যপাশ দিয়ে বের হতে পারলে সবপাড়া ঘুরে দেখা হয়ে যায়। বসতির চারপাশের উঁচু-নিচু টিলায় শাল বাগান জুড়ে পানক্ষেত। খাসি পানের প্রজাতিটাই ভিন্ন। আমাদের দেশে উত্পাদিত অন্যান্য জাতের থেকে স্বাদে আলাদা এবং চাষ পদ্ধতিও সাধারণ বরজ পন্থায় নয়। খাসিরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে ভিষণ সচেতন। কাঁচা সুপারির সঙ্গে বাগান থেকে সদ্য ছিঁড়ে আনা এক খিলি করে খাসিয়া পান খেতে পারবেন খাসিরাদের কাছে চাইলেই। পান খাওয়ার অভ্যাস না থাকলেও খাসিয়া পানের স্বাদ থেকে অনেকে বঞ্চিত হতে চায় না। - হাওয়া বদল প্রতিবেদক |