রফিকুল ইসলাম
রতন : বাঙালি জাতির
রাজনৈতিক ইতিহাসে
মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে
সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা
আর বিজয়
হচ্ছে সর্বশেষ্ঠ
অর্জন।
এই অর্জনের
পেছনে রয়েছে
এক সুদীর্ঘ
ইতিহাস।
প্রাচীনকালে পূর্ব
ভারতের যে
বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে
বাঙালি জনগোষ্ঠীর
বসবাস ছিল,
আজকের বাংলাদেশ
তার একটি
অংশ মাত্র। এ
অঞ্চলের মানুষগুলো
নানা গোত্র,
গোষ্ঠী ও
স্বতন্ত্র জনপদে
বিভক্ত ছিল। নানা
ঘাত-প্রতিঘাত,
সংযোজন-বিয়োজনের
মাধ্যমে একটি
ভৌগলিক ঐক্যসূত্রে
আবদ্ধ হয়ে
কালক্রমে বঙ্গ
থেকে বাঙ্গাল
বা বাঙ্গালা
বা বাংলা,
সুবে বাংলা,
নিজাম, বেঙ্গল,
পূর্ব বাংলা,
পূর্ব পাকিস্তান
এবং পরিশেষে
স্বাধীন বাংলাদেশ
ও স্বার্বভৌম
বাঙালি জাতির
অভ্যুদয় ঘটে। অষ্টম
শতাব্দীতে পাল
বংশ প্রতিষ্ঠার
মধ্য দিয়ে
বাঙালির স্বতন্ত্র
রাজনৈতিক সত্তা
মূর্ত হয়ে
উঠলেও বিভিন্ন
বিজাতীয় বিশেষ
করে ঔপনিবেশিক
শক্তির আগমন
এবং হস্তক্ষেপের
ফলে এর
স্বাভাবিক বিকাশ
সম্ভব হয়নি। অষ্টম
থেকে দ্বাদশ
শতাব্দী পর্যন্ত
পাল বংশ,
একাদশ শতাব্দী
থেকে ত্রয়োদশ
শতাব্দী পর্যন্ত
দাক্ষিণাত্যের সেন
বংশ, দ্বাদশ
থেকে পঞ্চদশ
শতাব্দী পর্যন্ত
তুর্কি ও
আফগান সুলতানি
শাসন, পঞ্চদশ
থেকে সপ্তদশ
শতাব্দী পর্যন্ত
মুঘল সবেদারি
ও নবাবি
আমল, সপ্তদশ
থেকে অষ্টাদশ
শতাব্দী পর্যন্ত
ব্রিটিশ ইস্ট
ইন্ডিয়া কোম্পানির
শাসন ও
শোষণ, অষ্টাদশ
শতাব্দীর মধ্যভাগ
থেকে ঊনবিংশ
শতাব্দীর প্রায়
মধ্যভাগ পর্যন্ত
ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের শাসন এবং
সর্বশেষ ১৯৪৭
সাল থেকে
১৯৭১ সাল
পর্যন্ত পাকিস্তানি
শাসন ও
শোষণে এই
বাংলা বারবার
হয়েছে নিষ্পেষিত,
বঞ্চিত, উপেক্ষিত
এবং অবহেলিত। প্রায়
১২শ’ বছরের
ভিন্ন ভিন্ন
জাতিগোষ্ঠীর এ
শাসন ও
শোষণের ফলে
সোনা ফলা
বাংলার উর্বর
জমিন যেমন
হয়ে পড়েছিল
নিষ্ফলা, তেমনি
এ ভূখণ্ডের
মানুষগুলোও বারবার
থেকেছে অধিকার
বঞ্চিত, সম্পদহারা
নিঃস্ব রিক্ত
জীর্ণশীর্ণ।
হাজার বছরের
বেশি সময়রে
এসব অপশাসন,
শোষণ আর
বঞ্চনার বিরুদ্ধে
এ বাংলায়
বিভিন্ন সময়
দেখা দিয়েছে
স্বতঃস্ফূর্ত কৃষক
বিদ্রোহ, ফকির
ও সন্ন্যাসী
বিদ্রোহ, চাকমা
বিদ্রোহ, প্রজা
বিদ্রোহ।
গড়ে উঠেছে
ফারায়জি আন্দোলন,
তেভাগা আন্দোলন
ও সমাজ
সংষ্কারসহ নানা
আন্দোলন।
তীতুমীরের কৃষক
বিদ্রোহ, নীল
বিদ্রোহ ও
রাজনৈতিক আন্দোলনের
মধ্য দিয়ে
এই ভূখণ্ডের
মানুষের রক্তে-মাংশে বিদ্রোহের আগুন
প্রবাহিত হতে
থাকে।
পরবর্তিত সময়ে
শোষণের বিরুদ্ধে
সাংগঠনিকভাবে রাজনৈতিক
আন্দোলন গড়ে
তুলতে কংগ্রেস
ও মুসলিম
লীগ ঐতিহাসিক
ভূমিকা পালন
করে।
এরই ধারাবাহিকতায়
বঙ্গভঙ্গ এবং
বঙ্গভঙ্গ রদ
আন্দোলনের মধ্য
দিয়ে ধীরে
ধীরে ব্রিটিশবিরোধী
আন্দোলন দানা
বেঁধে ওঠে। এক
পর্যায়ে লাহোর
প্রস্তাবের মধ্য
দিয়ে শুরু
হয় পাকিস্তান
আন্দোলন এবং
বিদায় নেয়
ব্রিটিশ।
কিন্তু পাকিস্তানিদের
২৪ বছরের
শোষণ, সামরিক
শাসন, ভাষার
বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
আর বঞ্চনার
বিরুদ্ধে পোড়
খাওয়া বাঙালি
১৯৪৮ সালেই
প্রতিবাদী হয়ে
ওঠে।
হোসেন শহীদ
সোহরাওয়ার্দী, মওলানা
আবদুল হামিদ
খান ভাসানী,
শামসুল হক
ও শেখ
মুজিবুর রহ