শিরোনাম: |
পর্যটনশিল্প বিকাশের অপার সম্ভাবনা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল
|
![]() ময়মনসিংহ ঢাকা থেকে খুব দূরে নয়। অপূর্ব সুন্দর এই অঞ্চলটি শুধু দেশের নয় আকর্ষণীয় হতে পারে দেশের বাইরের মানুষের জন্যও। আর এতে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি হতে পারে অসংখ্য মানুষের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা। ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় ৩১টি পর্যটন এলাকার মধ্যে সরকারিভাবে পরিচালিত হচ্ছে মাত্র ৪টি। এগুলো থেকে সরকার বছরে রাজস্ব পায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি। বাকি এলাকাগুলোর উন্নয়ন সরকারের আয় বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে। ছুটির দিনে ৪ পর্যটন কেন্দ্রে মানুষের উপচেপড়া ভিড় তাই বলে। ময়মনসিংহ জেলায় পর্যটন কেন্দ্র পড়েছে ১৯টি। সরকারি পরিচালনায় আছে মাত্র ১টি। সেটি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই সংগ্রহশালা ভ্রমণে এসেছিলেন ৩৫ হাজার ২২৭ জন পর্যটক-দর্শনার্থী। তাদের মধ্যে বিদেশিই ছিলেন ১০২ জন। এতে মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯৮৯ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। জামালপুরের এক লাউচাপড়া গারো পাহাড় থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয় হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। শেরপুরের গজনি অবকাশ ও মধুটিলা ইকোপার্ক থেকে আয় হয় যথাক্রমে ২২ লাখ এবং ২৫ লাখ টাকা। ময়মনসিংহ বিভাগে আছে চমত্কার সব রাজবাড়ি। এগুলো থেকেও সরকারের দারুণ আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান সরকার বেশ কিছু সংস্কার পদক্ষেপ নিলেও এই উদ্যোগ আরও বড় পরিসরে নেয়া প্রয়োজন। ঠিকমতো প্রচারণা পেলে জায়গাগুলোতে পর্যটক সামাগম তো বাড়বেই, রাজস্ব আয়ও হবে ভালো অঙ্কের। জেলার পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যান ও তত্সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদ, মহারাজ সূর্যকান্তের বাড়ি, শশী লজ (মহিলা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ), আলেকজান্ডার ক্যাসেল (টিচার্স ট্রেনিং কলেজ পুরুষ), রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ওয়ার্কস, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেন, কৃষি মিউজিয়াম, মত্স্য জাদুঘর ও উপমহাদেশের অন্যতম বৃহত্ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জার্মপ্লাজম সেন্টার। ত্রিশালে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, কবির স্মৃতিবিজড়িত বিদ্যাপিঠ দরিরামপুর নজরুল একাডেমি, গফরগাঁও উপজেলার জব্বার নগর (পাঁচুয়া) গ্রামে শহীদ আবদুল জব্বার জাদুঘর। এছাড়া ফুলবাড়িয়ার এনায়েতপুরে রয়েছে অর্কিড বাগান, আলাদিনস পার্ক ও সন্তোষপুর রাবার বাগান। মুক্তাগাছা জমিদারবাড়ি ইতোমধ্যেই পর্যটক আকর্ষণ করে চলেছে। ব্রহ্মপুত্র নদ, নদে জেগে ওঠা চর, বকশীগঞ্জের গারো পাহাড় এবং তার আশপাশের অন্যান্য অপূর্ব সবুজ পাহাড় সবই হতে পারে ব্যবসা সফল পর্যটনকেন্দ্র। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন, সড়ক পুনঃর্নিমাণ সবই প্রয়োজন সে জন্য। দুর্গাপুর-কলমাকান্দা উপজেলায় দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে কমলা রানির দীঘি, গারো পাহাড়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি, সোমেশ্বরী নদী, সুসং দুর্গাপুরের জমিদার বাড়ি, টংক আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ, সাধু যোসেফের ধর্মপল্লী, রাশিমণি স্মৃতিসৌধ, বিজয়পুর সাদামাটির পাহাড় ও নীল পানির লেক ইত্যাদি। যাতায়াত ব্যবস্থা দূর্বিসহ হওয়ায় এখানেও পর্যটকরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে পারেন না। আশার কথা হলো, সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে। বিভিন্ন প্রজেক্ট ইতোমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে। আগামী কয়েক বছরের মাঝেই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পাওয়া যাবে বলে এলাকাবাসী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশা ব্যক্ত করেছেন। - হাওয়া বদল ডেস্ক |