শিরোনাম: |
শীতের ছুটিতে ভ্রমণ
এক ঋতুর দেশ নয়নাভিরাম মালয়েশিয়া
|
![]() কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কেএলআইএ) নামকরণ কুয়ালালামপুর হলেও বিমান বন্দরটি কুয়ালালামপুর মূল শহর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে। তার পাশেই আরেকটি এয়ার এশিয়ার নিজস্ব বিমান বন্দর আছে। কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর মূল শহরে আসতে হলে ট্যাক্সি অথবা বাসযোগে আসতে হবে। কুয়ালালামপুরে অবস্থান করার জন্য থাকার হোটেলের জন্য বুকিট বিনতাং এলাকা বেছে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া চায়না টাউন, মসজিদ জামেক, পুডু রায়া, মহারাজা লেলাসহ পুরো কুয়ালালামপুরে অসংখ্য নামি-দামি হোটেল রয়েছে। পর্যটক হিসেবে মালয়েশিয়া এসে বুকিট বিনতাং এলাকায় থাকলে সব রকমের আনন্দ উপভোগ করা যাবে। বেশিরভাগ পর্যটক মালয়েশিয়া আসার পর থাকার জন্য বুকিট বিনতাং এলাকার হোটেলগুলোই বেছে নিয়ে থাকেন। হোটেলগুলোর একদিনের ভাড়া ৫০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত থেকে ৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত হয়। পছন্দ ও রূচির উপর নিভর্র করে হোটেলে থাকার বিষয়টি। কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বুকিট বিনতাং আসতে হলে ট্যাক্সিযোগে ভাড়া লাগবে ৭০-১০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। বাসে আসতে চাইলে ১০ রিঙ্গিত। বাস আসবে পুডু পর্যন্ত। পুডু থেকে নেমে একটু হেঁটে সামনের দিকে আসলেই বুকিট বিনতাং। এখান থেকে বাসে অথবা ট্যাক্সিতে করে যেখানে খুশি যাওয়া যাবে। বুকিত বিনতাংয়ে মালয়েশিয়ার অতি পরিচিত শপিং মার্কেট পেভিলিওন। তবে পেভিলিওন মার্কেট থেকে কেনাকাটা না করাই ভালো। সেখানে সব জিনিসের মূল্য অনেক বেশি। রাতে বুকিত বিনতাংয়ের সড়কগুলোতে নাচ-গানের আসর হয়। মালয়েশিয়ার সাংস্কৃতিকে আরও এক ধাপ বোঝাবে এ ধরনের নাচ-গান। নানা রকমের খাবার দোকানও বসে এখানে। মালয়েশিয়ায় দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই বললেই চলে। নানা রকম স্থাপনাগুলোকে অতি যত্নে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় এসে এই স্থাপনাগুলোতে ঢুঁ মারেন না এমন পর্যটক খুঁজে পাওয়া ভার। তাই চলুন জেনে নেই কোথায় ঢুঁ মারবেন আপনি। পেট্রনাস টুইন টাওয়ার- মালয়েশিয়ার নাম আসলে সর্ব প্রথম টুইন টাওয়ারের নাম বলতে হবে। মালয়েশিয়া আসলে টুইন টাওয়ার না দেখলে যেন সফরটাই বৃথা। সন্ধ্যার পর টুইন টাওয়ারের সামনে কে এলসিসি এলাকায় যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো সময়। সন্ধ্যা থেকে পর্যটকদের আগমন বাড়তে থাকে। এই এলাকায় বসে অনেক মানুষের মিলনমেলা। রাতের টুইন টাওয়ারের সৌন্দর্য দিনের টুইন টাওয়ারের চেয়ে পুরো ব্যতিক্রম। আনন্দের সঙ্গে যোগ হয় আলোক সজ্জায় সজ্জিত কেএলসিসি এলাকা। দুই টাওয়ারের মাঝের ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত বা ১২শ’ টাকার বিনিময়ে দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন এই স্কাইব্রিজে। বাতু গুহা- হিন্দু ধর্মালম্বীদের জন্য কুয়ালালামপুরের সব চেয়ে আকর্ষণীয় এবং সুন্দর জায়গা বাতু গুহা। পাথরের গুহার ভিতরে মন্দির। প্রায় ১০ তলা সমান উঁচু সিঁড়ি বেয়ে গুহায় প্রবেশ করতে হয়। মূল গেইটের একটু ভেতরেই বিশাল বড় মূর্তি। আশপাশের পাহাড় এই গুহার সৌন্দর্য আরো ফুটিয়ে তুলেছে। এছাড়া দেখা মিলবে শত শত কবুতর ও বানরের। প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক বিভিন্ন দেশ থেকে বাতু গুহায় ভীড় করেন। জু-নিগাড়া জু-নিগাড়া মালয়েশিয়ার জাতীয় চিড়িয়াাখানা। এখানে আছে নানান রকমের পশু-পাখি। বাঘ আর সিংহ ছাড়া সব প্রাণীকেই ছোঁয়া যায়। চাইলে দর্শনার্থীরা পশু-পাখিকে জড়িয়ে ধরে ছবিও তুলতে পারবে। শুধুই কি ছবি তোলা! পশু-পাখিদের প্রতি দরদতো সবারই। তাই চাইলে দরদী দর্শনার্থীরা তাদের আদর করতে চাইলে নেই কোনো বাধা। জু-নিগাড়া থেকে বের হয়ে আশপাশের শপিং মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যেতে পারে। পণ্য পছন্দ হলে কেনাকাটা করে ব্যাগ ভরিয়ে নেয়া যেতে পারে। চায়না টাউন চায়না টাউন মূলত মার্কেট। মালয়েশিয়ার সব চেয়ে কম মূল্যে পণ্য কেনা বেচার মার্কেট এটি। সেখানে বেশির ভাগ বিদেশীদের কেনা-কাটা করতে দেখা যায়। তবে চায়না টাউন থেকে দামদর করে পণ্য কিনতে হবে। ঠিক যেন বাজির মতো। দোকানি দাম হাঁকাবে আকাশ সমান। ক্রেতাকে বলতে হবে তার এক অংশ। শ্রী মাহা মারিয়াম্মান মন্দির চায়না টাউনের সঙ্গেই এই মন্দিরটির অবস্থান। ১৮৭৩ সালে ‘থামবোসামি পিল্লাই’ নামক একজন এই মন্দিরটি তার নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেছিলেন। তখন এই মন্দিরটি ছিল তার ব্যক্তিগত পারিবারিক মন্দির। ১৯২০ সালে এই মন্দিরটি সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কেএল টাওয়ার কেএল টাওয়ারের উপর থেকে কুয়ালালামপুর শহর দেখার দৃশ্য দেখতে মিস না করাই উত্তম। বিশেষ করে রাতের বেলার ঝলমলে আলোকজ্জ্বল দৃশ্য। মালয়েশিয়া থেকে ফেরার পরও যেন এই আলোকময় দৃশ্য চোখে লেগে থাকবে। কেএল টাওয়ার উঠতে জনপ্রতি খরচ হয় ৩০ রিঙ্গিত। এছাড়া শহরের বাইরে আছে পূত্রাজায়া, গ্যানতিং হাইল্যান্ড। আরও দূরে আছে লাংকাউই, পেনাং, যহরবারূ। এগুলো মালয়েশিয়াতে ভ্রমণের জন্য অন্যতম স্থান। - হাওয়াবদল ডেস্ক |