শিরোনাম: |
ভারত কোচের চোখে ‘দুর্দান্ত’ বাংলাদেশ
এই জয় ফাইনালের আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি
|
![]() ‘বাংলাদেশের রক্ষণভাগের মেয়েরা আমাদের মেয়েদের তুলনায় শক্তিশালী এবং উচ্চতার দিক দিয়েও বড়। তবে দেখা যাক-ফাইনালে কি হয়।’ ‘তাদের হোল্ডিং লাইন, রক্ষণভাগ পরিপক্কতা দেখিয়েছে। তারা অনেক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। দীর্ঘদিন যে একসঙ্গে রয়েছে-সেটাও তারা দেখিয়েছে। আমাদের মেয়েরা অত প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি।’ আগামী রোববার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। বাংলাদেশের প্রশংসা করলেও ফাইনালে প্রতিপক্ষকে ফেভারিট মানতে নারাজ রকি। ‘কোনো দলই ফাইনালের আগে হারতে চায় না। আমরাও জিততে চেয়েছি কিন্তু হয়নি। হার সবসময় হতাশার। অবশ্যই বাংলাদেশ ভালো দল। কিন্তু ফাইনালে বাংলাদেশ ফেভারিট-সেটা আমি বলব না। আমি বলব-আমার দল ফেভারিট।’ লাল-সবুজ জার্সি পরা একদল কিশোরীর কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের টার্ফে পা রাখার পর থেকেই দক্ষিণ গ্যালারিতে শুরু ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’ চিত্কার। স্টেডিয়াম ঘেঁষা দালানগুলোর ছাদ আর বারান্দা থেকেও লাল-সবুজ পতাকা দুলিয়ে মেয়েদের অনুপ্রেরণা যোগানোর চেষ্টা সমর্থকদের। বাসাবাড়ির ওই উত্সাহমূলক শব্দগুলো আঁখি-মনিকাদের কান পর্যন্ত হয়তো পৌঁছায়নি। তবে গ্যালারির স্লোগানগুলো ঠিকই মেয়েদের কান এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছে। গ্যালারিতে বাংলাদেশ, মাঠেও বাংলাদেশ। বাংলাদেশময় ম্যাচে কিশোরীদের পা’গুলো তুলি হয়ে ফুটবলের অনন্য এক ছবিই আঁকলো সবুজ টার্ফে। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি দেখতে স্টেডিয়ামে ঢুকেছিল হাজার দেড়েক দর্শক; কিন্তু তাদের চিত্কার চেঁচামেচি যে হারিয়ে দিয়েছে ভরা গ্যালারিকেও। ভারত পারবে না, সেটা দর্শকরা বুঝেছিল ম্যাচ শুরুর পরপরই। বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে শুরু থেকেই কোনঠাসা ছিল ভারত। মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্ডা, সাজেদা, রিতু আর শামসুন্নাহরদের বৃষ্টির মতো আক্রমনে যখন দিশে হারা ভারত, তখন গ্যালারিতে স্লোগান উঠলো মেয়েদের একটি একটি নাম ধরেও। কখনো ‘মনিকা, মনিকা’ কখনো ‘মারিয়া-সাজেদা’। রিতু-শামসুন্নাহরও দর্শকদের মুখেমুখে। এ অঞ্চলের ফুটবলে প্রধান প্রতিপক্ষ ভারতের মেয়েদের ৩-০ গোলে হারিয়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা যখন ড্রেসিং রুমে ফিরলো তখনো থামেনি গ্যালারির ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’ আর মনিকাদের নামে স্লোগান। ম্যাচটি ছিল ফাইনালের আগে ‘ফাইনাল’। ঠিক যেমনটি হয়েছিল গত বছর তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপের আঞ্চলিক পর্বের ম্যাচে। সেবার ভারতকে দুইবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতকে দুইবার হারানোর প্রতিজ্ঞা করেছে কিশোরী ফুটবলাররা। লক্ষ্যের একটি পূরণ, এখন অপেক্ষা ফাইনালে। দুই দলের প্রথম লড়াইয়ের চিত্রটা অবশ্য ফাইনালের আগে বাংলাদেশকেই ফেভারিট হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আগের ম্যাচটিতে নেপালের জালে ১০ গোল দিয়েছিল ভারত। ওই ম্যাচের পর বাংলাদেশ-ভারতের একটি কঠিন লড়াই হবে- এমন ভবিতব্যই করেছিলেন অনেক ফুটবলবোদ্ধা; কিন্তু মাঠে সব কিছু ভুল প্রমাণ করে ভারতের মেয়েদের নাকানি-চুবানি খাইয়েছে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। বাংলাদেশের নামের পাশে গোল তিনটি। হতে পারতো এর দ্বিগুণ। অন্য দিকে ভারত একবারের জন্যও বড় পরীক্ষা নিতে পারেনি বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তারকে। পোস্ট ছেড়ে তাকে বেশিরভাগ সময়ই দেখা গেছে নিজেদের সীমানার মাঝামাঝি জায়গায়। ফাইনালের রিহার্সেলে সুন্দর ফুটবল, সহজ জয়। এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়-কোচের একটা নতুন স্লোগান ‘উপভোগ্য ফুটবল’। সুন্দর ও উপভোগ্য ফুটবল খেলো, জয় আসবেই। হচ্ছেও তাই। এ নিয়ে তিনটি ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ। |