শিরোনাম: |
আমাকে দেখে কখনো ভিড় জমে না: ন্যানসি
|
![]() গানের সঙ্গে তার সখ্যতা সেই শৈশব থেকেই, মায়ের হাত ধরে। আর শোবিজে প্রায় এক যুগ পার করেছেন ন্যানসি গানের ভুবনে। আলাপকালে এই গায়িকা জানালেন গান ও ব্যক্তি জীবনের অনেক কথা। ন্যানসি বলেন, আমার আক্ষেপ হয় এত নাম, এত সুনাম অথচ আমাকে দেখে কখনো ভিড় জমে না। হা হা হা.... আমি রাস্তা দিয়ে জনমানুষের সঙ্গে হেঁটে গেলেও কেউ আমার দিকে একবারের বেশি তাকায় না। কেউ কেউ অবশ্য দ্বিধায় থাকেন আমি গায়িকা ন্যানসি কি না। সবাই মনে করে ন্যানসি হলে এভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম না। কারণ, আমাদের দেশের তারকারা পথে ঘাটে হাঁটেন না। তারা চারপাশে তারকাগিরির বলয় তৈরি করে রাখেন। এই বিষয়টা আমার মতো নিভৃতচারী তারকাদের জন্য সুবিধার হয়েছে। আজকাল সবাই সেলফি তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। অটোগ্রাফের জায়গায় ফটোগ্রাফ চলে এসেছে ট্রেন্ড হিসেবে। কোথাও গেলে কিছু মানুষ কাছে এসেই যান। তাদের সঙ্গে সম্ভব হলে সেলফিতে পোজ দেই। তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমার দুই মেয়েই ভালো গায়। সব ধরনের গানই ওরা গায়। আমার সব গান ওরা শোনেই মুখস্ত করে ফেলে। সেগুলো নিজেরা রেকর্ডও করে। বিশেষ করে আমার ছোটো মেয়ে গানের প্রতি খুব আসক্ত। ওরা নতুন যুগের মানুষ। আমি মা হিসেবে কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। গানে তারা আসতে চাইলে খুশি হবো। না আসলেও কষ্ট পাবো না। সঙ্গীত যাত্রায় বিশেষ ভূমিকার কথা বলেন ন্যানসি বলেন, আমার মা নিজে গান করতেন। হয়তো তার সুপ্ত বাসনা ছিল শিল্পী হবার। তিনি পারেননি। সেই স্বপ্ন আমার মাঝে তিনি প্রবাহিত করেছেন। মায়ের প্রিয় শিল্পী রুনা লায়লা। আমি সব গানই শিখতে চেষ্টা করেছি। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিতে হয়েছে। নজরুল-রবীন্দ্র সঙ্গীত শিখেছি। আবার রুনা লায়লার গানও করতাম। তবে নজরুল সঙ্গীতেই বেশি মনযোগ দিয়েছি। কোনো ফাংশানে গেলে গেয়েছি। এমনকি আমি যখন বেতারে তালিকাভুক্ত হলাম নজরুলের গানের শিল্পী হিসেবেই হিয়েছি। তবে শেষাবধি শুধু শিল্পী ন্যানসিই হয়ে গেলাম। তবে আমার গান করা নিয়ে মা অনেক সন্তুষ্ট ছিলেন। তিনি আমার সাফল্য দেখে যেতে পেরেছেন এটা সন্তান হিসেবে আমার অনেক বড় তৃপ্তি। ন্যানসি বলেন হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গেই আমার প্রথম কাজ, সেই দিন চিরকালই আমার কাছে নতুন আর স্মৃতিতে তরতাজা। হাবিব ভাইয়ের বাবা ফেরদৌস ওয়াহিদ হঠাত্ কল দিয়ে বললেন একটু বাসায় আসো। হাবিব তোমাকে দিয়ে সিনেমায় গান করাবেন। আমি তো আনন্দ-উচ্ছ্বাসে পাগল হবার উপক্রম। মাকে নিয়ে চলে এলাম হাবিব ভাইয়ের বাসায়। কিন্তু এসে যারপরনাই হতাশ হলাম। কোথায় কী সিনেমার গান। আমাকে কেবল ‘ভালো বাসবো বাসবো রে বন্ধু’ গানের কোরাস করতে দেয়া হলো। মনটাই ভেঙে গেল। তবে মজার ব্যাপার হলো এই অল্প একটু কাজের জন্যই হাবিব ভাই আমাকে একটা পারিশ্রমিকের খাম ধরিয়ে দিয়েছিলেন। এটাই ছিল প্রথম কাজ। পারিশ্রমিক বিষয়ে তিনি এওবলেন, আমি অনেক ভেবেচিন্তেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গানে শিল্পীরা টাকা একবরাই পায়। কিন্তু গানের ব্যবসাটা চলবে অনন্তকাল। যেহেতু অনন্তকাল সেই গান থেকে আমার আয়ের ব্যবস্থা নেই সেহেতু আমি এককালীন টাকা নেয়ার সময় অবশ্যই পারিশ্রমিকটা বাড়িয়ে নেব। আমার চাহিদা, যোগ্যতা অনুযায়ী আমি যতটুকুর যোগ্য ততটাই নেব। তবে দেশের গানের ক্ষেত্রে আমি কোনো পারিশ্রমিক নেই না। আমি ভেবে দেখলাম যে দেশ আমাকে জাতীয় স্বীকৃতি দিয়েছে সেই দেশের জন্য আমার কোনো গান থাকবে না! সবাই প্রেম-ভালোবাসার গান নিয়ে আমাকে ভাবে। দেশের গান তো কেউ করতে বলছে না। তাই বিনা পারিশ্রমিকে দেশের গান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজকাল গান প্রসঙ্গে ন্যানসি নলেন, খুবই অপছন্দ আমার। অ্যালবামে গান করে যে তৃপ্তি সেটা এইসব ডিজিটাল সিস্টেমে কোনোদিনই পাওয়া যাবে না। আজকাল তো দেখি একটা গান নিয়েও অ্যালবাম হয়ে যাচ্ছে! আমাকেও এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে আমি ফিরিয়ে দিয়েছি। এইসব নিয়েও সোচ্চার হওয়া উচিত। সিনিয়র, গুণী শিল্পীদের খোঁজ রাখছে না কেউ। চাকচিক্যে মজে গিয়ে যাকে তাকে প্রমোট করা হচ্ছে। এটা হতাশার। সামনেই ভালোবাসা দিবস ভক্তদের উদ্দেশ্যে ন্যানসি বলেন, আমার কাছে ভালোবাসার কোনো ব্যাখ্যা নেই। ভালোবাসা তার মতো। কিছুই মানে না। না নিয়ম, না সংজ্ঞা, না ব্যাকরণ। আমি গান ছেড়ে দিতে চাইলাম কিন্তু গান আমাকে বারবার টেনে আনে। এটাও এক রকম ভালোবাসা। সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার স্বামী আমার ভালোবাসে, আমার বাচ্চারা আমায় ভালোবাসে- এটাই শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা। আমার ঘোরাঘুরি ভালো লাগে না। বরং ময়মনসিংহের নিজের বাসা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের দৃশ্যই আমাকে বেশি মুগ্ধ করে। উলেখ্য, সম্প্রতি ‘পাগল তোর জন্য রে-২’ গেয়েছেন এ গায়িকা। এখানে তার সঙ্গে গাইবে এস এ কিরণ। ‘পাগল তোর জন্য রে’ গানটিও কিরণের গাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে । |