বর্তমান ডেস্ক : ১০ দিনে একের পর এক বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ দিয়ে নিজ দেশেই তোপের মুখে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই প্রশ্ন উঠছে তার বাণিজ্য নীতি নিয়েও। এরই মধ্যে পূর্বসূরিদের ব্যবসানীতির ৭৫ ভাগই বদলে ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। মুক্তবাজার অর্থনীতি বাদ দিয়ে রক্ষণশীল অর্থনীতি পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসন। সমালোচনা চললেও আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে বেশকিছু চুক্তির ইঙ্গিত দিয়েছে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিও। বাণিজ্য হবে। তবে সবাই এক সঙ্গে নয়, এক এক করে। ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ ডিল বা টিপিপি বাতিলের পর শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই বলেছিলেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর শপথ নেয়ার পর উদ্বোধনী ভাষণে বলেছিলেন, মার্কিনিদের চাকরির সুযোগ বাড়ানোই তার লক্ষ্য। টিপিপি বাতিল, নাফটা পুনর্মূল্যায়ন, ব্যবসার ক্ষেত্রে ৭৫ ভাগ নিয়ম-কানুন বাতিল এবং বিদেশে বিনিয়োগকারী মার্কিন কোম্পানীর উপর কর কমানোর পদক্ষেপ আভাস দেয়, মুক্তবাজার অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে এসে রক্ষণশীল অর্থনীতি চায় ট্রাম্প প্রসাশন। যার জের হিসেবে এরইমধ্যে এশিয়ান পরাশক্তি চীন ও সীমান্তবর্তী দেশ মেক্সিকোর সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের আভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যার মধ্যে রয়েছে আমদানির উপর শুল্ক বাড়ানো ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ। মেক্সিকো পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইস ভিডেগারে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে মেক্সিকোর পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বাড়িয়ে সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের খরচ মেক্সিকানদের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে না ট্রাম্প। বরং ওই খরচ পরোক্ষভাবে মার্কিনিদের পকেট থেকে আসবে। মেক্সিকানদের নয়।’ তবে বাধ সাধতে পারে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছি ডব্লিউটিও। যা বিশ্বে রপ্তানি এক ট্রিলিয়ন ডলার বাড়াবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ডাব্লিউটিও মহাসচিব রবার্টো আজেভেডো বলেন, ‘বাণিজ্য যুদ্ধের সমস্যা হচ্ছে, এটি কোন নিয়মের তোয়াক্কা করে না। ফলে সব রীতি ভেঙে অর্থনীতি চললেও দীর্ঘ মেয়াদে এটি টেকসই হয়না।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ মার্কিনিদের ভাগ্য বদলানোর পরিবর্তে তা আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
কারণ, মার্কিন করপোরেশনগুলো কর কমানোর সুযোগে মুনাফা বাড়ালে তা দিয়ে চাকরি সুযোগ নয় বরং লভ্যাংশ বাড়ানোর উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত হবে। আর ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় কোটিপতিদের অগ্রাধিকার জানান দেয়, সাধারণ নয় বরং ধনাঢ্য মার্কিনিদের স্বার্থের দিকেই বেশি নজর থাকবে তাদের। এফএক্স স্ট্রাটেজি সিআইবিসি প্রধান জেরেমি স্ট্রেচ, বলেন, ‘আমাদের তত্ত্ব আর বাস্তব নীতির প্রয়োগের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে। ট্রাম্পের বাণিজ্যের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি জানান দেয়, এখনো তত্ত্বের মধ্যেই রয়েছে মার্কিন অর্থনীতি।’
তবে মার্কিন অর্থনীতির খারাপ অবস্থার সুযোগে কিছুটা সুবিধা বা ‘বেনিফিট অব ডাউট’ পাচ্ছেন ট্রাম্প। যার প্রতিফলন দেখা যায় মার্কিন পুঁজি বাজারে। বেশ কয়েকদিন ধরেই চাঙ্গা ওয়ালস্ট্রিট। আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-র যুক্তরাষ্ট্র সফরও আভাস দেয়, বাণিজ্যে আপত্তি নেই তাদের। সূত্র: চ্যানেল টোয়েন্টিফোর