শিরোনাম: |
রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্কে সঠিক চর্চা এবং তাদের সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে বিশ্লেষণের প্রাসঙ্গিকতা
|
![]() বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে আমি প্রথমে জাতিসংঘের একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম এবং পরবর্তীতে দুটি সনামধন্য প্রাইভেট ব্যাংকসহ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তথা বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি পাই। পরে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির কাজ ছেড়ে অনেকটা পারিবারিক চাপে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করি। উদ্দেশ্য, তুলনামূলকভাবে কম চাপের এ চাকরিতে থেকে সিভিল সার্ভিসে যোগদানের লক্ষ্যে পড়াশুনা করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবার সুযোগ পাওয়া যাবে। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পর আমার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রায়শ কারণে-অকারণে রবীন্দ্রনাথের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্দার করেন এবং তখন লক্ষ্য করেছি যে তার কথার মধ্যে কোনো তথ্য-উপাত্ত থাকতো না। এমনকি তিনি কোনো কোনো সময় রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধ বিষোদগার করতে গিয়ে অনেক অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করতেন যা লেখারও অযোগ্য। শুধু তিনি একাই নন, অনেকসময় তার সে আলোচনায় সমমানসিকতা সম্পন্ন আরও কয়েকজন এসে শামিল হতেন। তাদের মূল বিষয়টি থাকত দুটি বিষয়ের ওপর- একটি হলো রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতায় প্রেম, ভালোবাসা ও বিরহের প্রকাশভঙ্গি আর অন্যটি ব্রিটিশদের বিরূদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কোন লেখা তাদের দৃষ্টিগোচর না হওয়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই কর্মকর্তাটি তার আলোচনাকালে এক পর্যায়ে আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে একহাত নিয়ে বললেন যে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটিকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে সিলেক্ট করাটা ছিল হিন্দুস্তান অর্থাত্ ভারতপন্থিদের চাল। রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত এই গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করায় কোনো ভুলটা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন ‘কেন? ওই ভারতীয় হিন্দু ব্যাটা ছাড়া আর কারো কোন গান ছিল না?’ আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে তাহলে কার লেখা কোন গানটা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচন করা যেত বলে আপনার ধারণা? তিনি বললেন, ‘কেন? নজরুলের কোন গান নেয়া যেত না?’ আমি বললাম যে নজরুলও তো ভারতেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন! সে অর্থে তো তিনিও জন্মসূত্রে ভারতীয়! আর তর্কের খাতিরে যদি মেনেও নেই যে নজরুলের লেখা গানই বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়া উচিত ছিল, তাহলে বলুন তো কোন গানটি আপনি সাজেস্ট করতেন? সরকারি হিসাব শাখায় কর্মরত এবং ততদিনে রিটায়ারমেন্টে যাবার প্রস্তুতি নিতে যাওয়া এ কর্মকর্তাটি নিজে থেকে নজরুলের কোন গানের একটা কলিও সাজেস্ট করতে পারলেন না! আবার এই তিনিই পরক্ষণে বলতে শুরু করলেন যে রবীন্দ্রনাথ বরাবরই ব্রিটিশদের পদলেহন করেছেন এবং এগুলো তার ভাষায় তথাকথিত বিশ্বকবি তার বিভিন্ন লেখায়ও প্রকাশ করেছেন। আর এ গুলো করেছেন বলেই ব্রিটিশদের স্তাবকতার পুরস্কার স্বরূপ রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দেয়া হয় বলে তিনি কুতর্ক করছিলেন। আরও যোগ করলেন, ‘আসলে নোবেল পুরস্কারটি পাবার কথা ছিল কাজী নজরুলেরই’। আমি তাকে রবীন্দ্রনাথ কোনো সালে কোনো কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন আর তখন নজরুলের বয়স কত ছিল আর নজরুল ততদিনে কি কি বই লিখেছিলেন সেসব তিনি জানেন কি না জিজ্ঞেস করলাম। তিনি কোন প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর দিতে পারলেন না। তাকে আমি বুঝালাম যে রবীন্দ্রনাথ যখন ১৯১৩ সালে তার গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে প্রথম বাঙালি হিসেবে নোবেল পুরস্কার পান তখন কাজী নজরুল ইসলামের বয়স মাত্র ১৪ বছর এবং স্বাভাবিকভাবেই তখন পর্যন্ত তার কোনো গ্রন্থ প্রকাশ পায়নি। সুতরাং নজরুলের প্রাপ্য নোবেল পুরস্কারটিই রবীন্দ্রনাথকে দিয়ে দেয়া হয়েছে এমন ভাবনা বড় ধরনের অজ্ঞতা এবং চরম নিন্দনীয়। তিনি আমার কথার বিপরীতে চুপ থাকলেও তার চিন্তা আর মনন তথা মগজের রোগ আমি সারাতে পেরেছি অন্তত সেটা মনে হয়নি। তাকে আরও বললাম যে নজরুল নিজে প্রচুর রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে পারতেন এবং তখনকার সময়ের শিল্পী প্রতিভা বসু, মা মৈত্র ও শফিকুন্নেসাসহ অনেককে নজরুল নিজে অনেক রবীন্দ্র সঙ্গীত শিখিয়েছেন। মোজাফপর আহমদ লিখেছেন যে ‘আমরা বলতাম নজরুল ইসলাম রবীন্দ্র-সঙ্গীতের হাফিজ। নানা জায়গায় তিনি রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন। যুদ্ধের সময় ট্রাঙ্কে থাকতো রবীন্দ্রনাথের গানের বই। দেশে ফিরেই পরিচিত হয়েছিলেন হরিদাস চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তার সময়ে তিনি ছিলেন রবীন্দ্র-সঙ্গীতের অনেক বড় গায়ক।’ অন্যদিকে আনন্দময়ীর আগমনী কবিতা লিখের নজরুল যখন জেলে যান, তখন রবীন্দ্রনাথ তার বিখ্যাত ‘বসন্ত’ নাটকটি নজরুলকে উত্সর্গ করেন। কবিগুরুর অনেক ইচ্ছে ছিলো ‘বসন্ত’ নাটকটি নিজের হাতে নজরুলকে দেবেন। কিন্তু সময় ও শরীর অনুকূল না থাকায় তিনি পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে বইয়ের এক কপি স্বাক্ষরসহ দেন। ‘বসন্ত’ নাটকের উত্সর্গপত্রে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ‘শ্রীমান কবি নজরুল ইসলাম স্নেহভাজনেষু।’ তরুণ এক প্রতিভাকে রবীন্দ্রনাথ তখনই কবি বলে স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘অরুগ্ন-বলিষ্ঠ-হিংগ্র-নগ্ন-বর্বরতা তার অনবদ্য ভাবমূর্তি রয়েছে কাজীর কবিতায় ও গানে। কৃত্রিমতার ছোঁয়া তাকে কোথাও ম্লান করেনি, জীবন ও যৌবনের সব ধর্মকে কোথাও তা অস্বীকার করেনি। মানুষের স্বভাব ও সহজাত প্রকৃতির অকুণ্ঠ প্রকাশের ভেতর নজরুল ইসলামের কবিতা সব দ্বিধা-গুণের ঊর্ধ্বে তা আসন-গ্রহণ করেছে।’ অর্থাত্ বিষয়টি দাঁড়াল যে, নজরুল কিংবা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা না নিয়ে, তাদের লেখা বই, কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস, নাটক, কিংবা তাদের জীবন ও কর্ম এবং তাদের লেখা গানের বিরাট ভাণ্ডার সম্পর্কে সাধারণ পাঠ না করেই বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং বাংগালির চিন্তা ও মনন গঠনের দুই মহান স্রস্টাকে হীনমস্তিস্কের এসব লোক ‘যেমনি মনচায় তেমনি’ রকমের বিশ্লেষণ করেন। আর এর প্রভাব অন্য কোথাও না পড়লেও তাদের নিজ পরিবারে যে পড়ছে তা নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে আরও একটি ঘটনা তুলে ধরতে চাই। একবার এক ঈদের ছুটিতে আমি বাড়িতে গেলাম এবং বাড়ির ঐতিহ্য অনুযায়ী এলাকার অনেকেই ঈদের দিন এবং তার পরের দিন আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে আসেন। অনেকের মতো পাশের গ্রামের সবুজ যে কি-না বয়সে আমার কয়েক বছরের ছোট- সেও আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে বাড়িতে আসল। সবুজ আমাকে চাচা বলে ডাকে এবং সে সিলেটের একটি নামি কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ এবং এমএ পাস করে এখন তাদের গ্রামের মোটামুটি সবচেয়ে উচ্চ শিক্ষিতদের একজন এবং একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার পেশায় চাকরিরত। আমাদের বাড়িতে শিক্ষা-সংস্কৃতি তথা শিল্প সাহিত্যের আলোচনা, এগুলোর বর্তমান প্রবনতা ও গতিধারা এবং সঙ্গীতের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এমনি সাধারণ আলোচনার একটা রেওয়াজ অনেক দিনের। সেটা সবুজ জানে বলেই হঠাত্ করে সে আমার সঙ্গে এ ধরনের কিছু বিষয়ে কথাবার্তা শুরু করে। কোনো বিশেষ বিষয়ে আলোচনায় সেভাবে প্রবেশের আগেই সবুজ আমাকে বলল যে সে কোনো বিবেচনাতেই রবীন্দ্রনাথকে পছন্দ করে না, করতে পারে না। আমি তার কথাটাকে প্রথমে গুরুত্ব দেইনি এই ভেবে যে একটা সমাজে বিভিন্ন রুচিবোধের এবং বিভিন্ন মানসিকতার লোক থাকেন আর সমাজের সবাই তো মিস্টি পছন্দ করেন এমন নয়। সবুজের ব্যাপারটাকে সেভাবেই দেখা যেতে পারে মনে করে গুরুত্ব না দিয়ে পাশ কাটানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু সবুজ একটু পরেই আবারও রবীন্দ্রনাথের বিষয়টি আলোচনায় টেনে বলতে থাকল যে সে রবীন্দ্রনাথকে মোটেও সহ্য করতে পারে না। তখন আমার মনে হল সবুজের বিষয়টাতো আসলে খুব সহজ ও হালকাভাবে নেয়া ঠিক নয়। একজন শিক্ষক যিনি অন্ধকারে আলো ছড়াবেন, শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পথ দেখাবেন এবং একটি সুস্থ, পরমতসহিষ্ণু ও মানবিক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখবেন শিক্ষকরুপী সেই সবুজরা যদি এরকম কুপমণ্ডুক আর সংকীর্ণ মনের থেকে যায় তাহলে তো জাতি হিসেবে আমাদের ভবিষ্যত্ নিয়ে দুশ্চিতার যথেস্ট কারণ আছে। আমি তাকে থামিয়ে রবীন্দ্রনাথকে তার পছন্দ না করার কারণ কি জানতে চাইলে সবুজ বলল যে কোনো বিশেষ কারণ নেই, তবে সে রবীন্দ্রনাথের পরিবর্তে কাজী নজরুল ইসলামকে পছন্দ করে। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম যে নজরুলকে সে পছন্দ করে এটা খুবই ঠিক আছে এবং এটা সে করতেই পারে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে তার না পছন্দ হবার কারণ কি তিনি হিন্দু ব্রাম্ম সমাজের লোক সে জন্য? জবাবে সে কারণ হিসেবে অত্যন্ত সিরিয়াস হয়ে অবলীলায় বলে যে এটাই মূল কারণ। আমি সবুজকে জিজ্ঞেস করে এটাও জানতে পারলাম যে এমএ পাশ করলেও সে রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের কোনো একটা কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস কিংবা অন্যকোন বই বা দু-এক খানা গানের কলি সে পড়েও দেখে নি। ছাত্রাবস্থায় ক্লাসের বইতে যেটুকু থাকতো সেটুকু সে পরীক্ষা পাশের জন্য পড়লেও তার একটি বাক্যও সে বুঝার চেষ্টা করেনি। মেজাজটা আমি আর ধরে রাখতে না পেরে কতক্ষণ তাকে গালিগালাজ করেছি। তাকে বহুভাবে নজরুল-রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন লেখার উপজীব্য, সমাজ, সামাজিক ব্যবস্থা ও মানুষের জীবনবোধ নিয়ে তাদের কর্ম ও সৃষ্টি নিয়ে ধারণা দিতে গিয়ে যা বুঝলাম তাতে এ ধারণাটাই সত্য হলো যে সবুজ শিক্ষকতা করছে কিন্তু সে নিজে কোনো বিষয়ে জ্ঞ্যান অর্জন করেনি- অন্তত রবীন্দ্রনাথ আর নজরুল সম্পর্কে তো নয়ই। আমি উপরের দুটি ঘটনার উল্লেখ করলাম এজন্য যে সামপ্রদায়িক শক্তির প্রথম সূত্রই হলো, রবীন্দ্রনাথকে নজরুলের সঙ্গে কিংবা নজরুলকে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তুলনা করে একজনকে আরেকজনের চেয়ে চেয়ে বড় করে প্রচার করা এবং নজরুলের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের একটি কাল্পনিক শত্রুতার সম্পর্ক আবিষ্কার করে তা আরও বেশি নেতিবাচক করে প্রচার করে ধর্মপ্রাণ বাঙালিদের মধ্যে বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব জানিয়ে তোলা। কিন্তু এসব সাম্প্রদায়িক তর্কজীবীরা কখনো বুঝতে চায় না যে কোনো লেখক তার নিজস্ব পরিবার, কর্মক্ষেত্র, মিথস্ক্রিয়া ও পারিপার্শ্বিকতা থেকে তার সাহিত্যের ভাষা ও চরিত্র গ্রহণ করেন। নজরুল যেমন ইসলামি পরিমণ্ডলের বাইরেও হিন্দু পরিমণ্ডলে বিচরণ করেছেন, তার মিথস্ক্রিয়া যেমন ছিল মুটে মজুরদের কর্মক্ষেত্র থেকে যুদ্ধক্ষেত্র পর্যন্ত, রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে সেরূপটি ঘটেনি। তাই ভাষা ব্যবহার ও চরিত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে নজরুলের যে বৈপ্লবিক বহির্মুখিতা দেখা যায়, রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রে সেটা দেখা যায় না। তাই বলে রবীন্দ্রনাথ যে কোনো ধর্মকে বড় করে দেখে অন্য কোনো ধর্মকে খাট করে দেখে তার সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন, এমন কোনো প্রমাণ তো নেই। বর্ণিত ঘটনা দুটোর আলোকে বক্তব্য হলো, আমাদের সমাজে লেখাপড়া জানা শিক্ষিত মানুষদের চিন্তা-ভাবনা যদি এরকমই হয় তাহলে আমরা কোন দিকে যাচ্ছি সে বিষয়ে প্রশ্ন এসে যায়। যারা যুক্তি বুঝে না, যুক্তির ধারে কাছেও যায় না, কিংবা সাধারণ জ্ঞান খাটাতে চায় না তারাই তো আসলে সমাজ পরিবর্তনের পথে, উন্নয়ন ও প্রগতির পথে প্রধান বাধা। এ ধরনের কুপমণ্ডুকদের কারণেই বোধ হয় এই আধুনিককালেও এবং বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির নজিরবিহীন উত্কর্ষতার পরও আজকের সমাজে গোঁড়ামির প্রভাব অত্যন্ত প্রকটভাবেই রয়েছে। আমি যে দুটো ঘটনার কথা উল্লেখ করলাম এ রকম আরও অনেক ঘটনা আমার প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হয়েছে যা লিখলে এ লেখার কলেবর শুধু বাড়তেই থাকবে। তবে আমি যা বুঝতে পারছি তাহলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, বিভিন্ন পর্যায়ের পাঠক্রম এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এসব বিষয়ে আমূল পরিবর্তন এনে পুরো ব্যবস্থাকে আরও জ্ঞানভিত্তিক ও বাস্তবতা নির্ভর করতে হবে। তা নাহলে দেশের শিক্ষার্থীদের শুধু সনদসর্বস্ব শিক্ষিত করতে পারব, কিন্তু তারা চিন্তা-চেতনা ও মননে যোগ্য ও প্রজ্ঞাবান সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে না। |