শিরোনাম: |
অনন্য সম্মানে শেখ হাসিনা
|
![]() আর সাম্প্রতিককালে এমন স্বীকৃতি আসতে শুরু করার অন্যতম কারণ হলো রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুতে। যে দেশে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে প্রায় ছয় লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদানে সমর্থ হয় সেটা শুধু ‘শান্তি কন্যা’, মানবতার অন্যতম রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। অথচ ধনী হওয়া সত্ত্বেও এইতো গত দু’বছর আগেও সিরিয়াতে গৃহযুদ্ধের কারণে মাত্র এক লাখ শরণার্থী নিতে সারা ইউরোপজুড়ে অপারগতার অন্ত ছিল না। সে রকম একটি মানবিক অসাধ্য সাধনজনিত কাজ সম্পন্ন করতে পারায় বিশ্বজুড়ে প্রশংসার ফুলজুড়ি পরতে থাকে শেখ হাসিনার জন্য। পহেলা নভেম্বর ২০১৭ সালে রাজধানী ঢাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত গৌরবময় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) সম্মেলনেও ঠিক একই কথা উচ্চারিত হচ্ছে বিশ্বনেতৃবৃন্দ দ্বারা। সে জন্য সম্প্রতি জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে যাওয়ার পর তাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধি দিয়েছে। অপরদিকে অতিসম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও বাণিজ্য ভিত্তিক ‘ফোর্বস’ নামের একটি সাময়িকী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘লেডি অব ঢাকা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। সাময়িকীটি প্রতি বছর বিশ্বের ১০০ জন ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। এবারও (২০১৭) তা প্রকাশ করেছে। সেখানে শেখ হাসিনা আগের বছরের (২০১৬) তুলনায় ছয়জনকে ডিঙ্গিয়ে ৩৬ থেকে ৩০-এ অবস্থান পেয়েছেন। তার আগের বছর (২০১৫) এ তালিকায় তিনি ছিলেন ৫৯ নম্বরে। এ তালিকায় এবারে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচি শেখ হাসিনা থেকেও তিনটি অবস্থান পিছিয়ে ৩৩-এ স্থান পেয়েছেন। অথচ গত বছর (২০১৬) সুচির অবস্থান ছিল ২৬-এ। বরাবরের মতো সপ্তমবারে নিজের প্রথম অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছেন জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মারকেল। তিনি তার নিজের দেশেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করার কারণে সম্প্রতি টানা চতুর্থবারের মতো দেশটির চ্যান্সেলর নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থান থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে পিছনে ফেলে তা দখল করে নিয়েছেন ব্রিটেনের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। হিলারি এবারে ছিটকে গেছেন ৬৫ নম্বরে। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস এক ধাপ এগিয়ে তৃতীয় স্থানে চলে গেছেন। সাবেক মার্কিন ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা তালিকায় আগে থাকলেও এবারে বাদ পড়েছেন। সেখানে ১৯তম স্থান করে নিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, সর্বোপরি ফোর্বসের এ তালিকায় ১০০ জনের মধ্যে অর্ধেক নারীই নাকি যুক্তরাষ্ট্রের, যুক্তরাজ্যের আছে আটজন, আর ইউরোপের ১৩ জন এ তালিকায় রয়েছেন। শেখ হাসিনা যে আজ শুধু দেশের মানুষের জন্য কাজ করছেন তাই নয় তিনি আন্তর্জাতিকভাবেও মানবিক ও শান্তির নেত্রী হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করছেন। সে কারণে ২০১৭ সালের জন্য নোবেল কমিটির কাছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য তার নামটি প্রস্তাব হয়েছিল। কিন্তু সেখানে কিছু দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক শক্তির কূটকৌশল ও আঞ্চলিক ষড়যন্ত্রের কারণে তা এবার সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে। তবে এবার পাওয়া যায়নি বলে তা আগামীতে পাওয়ার সম্ভবনা ফুড়িয়ে যায়নি। কারণ তিনি যেভাবে কাজ করে চলেছেন তাতে এ অঞ্চলে বর্তমানে একমাত্র তিনিই নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদি অং সান সুচি এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলনা করা হয় তবে সেটা হবে আকাশের সঙ্গে পাতালের তুলনা। কারণ রোহিঙ্গাদের বিরোধিতা করে তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকারে পরিণত করে সুচি যেভাবে বিতর্কিত হয়েছেন। সে জন্য তার বিদেশি অনেক ডিগ্রি, স্বীকৃতি, সম্মান কেড়ে নেয়া হচ্ছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার কারণে শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে বিভিন্ন অভিধা যুক্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ এবং ‘লেডি অব ঢাকা’ তাদের অন্যতম। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাকর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয় তার জন্য তেমন কোনো কঠিন কাজ হবে না। আর তেমনটি হলে তা আমাদের দেশের জন্য হবে একটি বিরল সম্মানের। সেখানেই প্রমাণিত হবে এসব সম্মান, পুরস্কার, উপাধি ও অভিধার। আমরা তার জন্যই অপেক্ষারত থাকলাম। লেখক: ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় |