শিরোনাম: |
দল-মত নির্বিশেষে সবাই ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল
|
![]() জাকির হোসেন (একুশের কবিতা সঙ্কলন) ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের একান্ত সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। ওই সাক্ষাত্কারে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন নিয়ে আব্দুল মতিন স্মৃতিচারণ করেছেন। পাকিস্তান শাসকদের সব চক্রান্ত রুখে বাঙালি সে দিন নিজের অধিকার আদায় করে নিয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের অনেক অর্জন আছে। দুঃখজনক হলো, এত বছর পরেও সর্বস্তরে আমাদের মাতৃভাষা বাংলা চালু হয়নি। বায়ান্নর ২১ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার মুক্তি ঘটে সত্য। তবে এখনও এ ভাষার যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। বাংলা ভাষা নিয়ে যথাযথ গবেষণা হচ্ছে না। ভাষাসৈনিকদের যথাযথ মূল্যায়নও এ দেশে হয়নি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মতো ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসও বিকৃত হচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে একুশের প্রভাতফেরি সংস্কৃতি। একুশের মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক অর্জন হয়েছে। তবে প্রত্যাশিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন হয়নি। আন্দোলনের মূল প্রত্যাশা অনুযায়ী সর্বস্তরে বাংলা চালু হয়নি। কেন হয়নি এ প্রশ্নের উত্তর ভাষাসৈনিকদের জানা নেই। কীভাবে চালু করা যায়, সেটাও তাদের জানা নেই। ভাষাশহীদ ও সৈনিকরা মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন করেছেন, জীবন দিয়েছেন। তবে এ ভাষাকে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে চালু করার দায়িত্ব তাদের নয়। দায়িত্বটা তাদের, যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন। আমি মনে করি, সর্বস্তরে বাংলা চালু এবং একে নিয়ে গবেষণা না হলে আমাদের মাতৃভাষা এগোতে পারবে না। একুশের একটি সংস্কৃতি হলো প্রভাতফেরি। ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ সকালে শিক্ষার্থীরা প্রভাতফেরি করেন। এ সংস্কৃতিও হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বলতে পারেন, এটা অনেক বছর আগের ব্যাপার। সময়ের ব্যবধানে তো অনেক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বা রীতি বিলুপ্ত হয়। তাদের বক্তব্য আমি সঠিক বলেই মনে করি। এটাও সত্য, প্রভাতফেরির জন্য দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাঠ আর সে রকম সুযোগ-সুবিধাও নেই। ভাষা আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের ছিল না। সেটা ছিল ছাত্রদের আন্দোলন। আজকের প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস ঠিকভাবে জানানো প্রয়োজন। প্রকৃত ইতিহাস রচনার মাধ্যমে বিকৃতি ও বিভ্রান্তির অবসান ঘটানো এখনই দরকার। |