শিরোনাম: |
মাস্ক পরা নিশ্চিতে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার
মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ৪৪ হাজার মিলিয়ন ডলার, সরকারি চাল পেয়েছে ১ কোটি ৬ হাজার পরিবার
|
![]() চূড়ান্ত অনুমোদন পেল চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন: দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সার্বিক কল্যাণ এবং তাদের পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০২০ এর খসড়ার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অসচ্ছল ও অক্ষম শিল্পীদের কল্যাণ ও চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইনটি তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই আইনের মূল লক্ষ্য হবে চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণ সাধন, তাদের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ, অসচ্ছল, পেশাগত কাজে অক্ষম শিল্পীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান ও অসচ্ছল শিল্পীদের মৃত্যু হলে তাদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান। এই ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে। যার চেয়ারম্যান থাকবেন তথ্যমন্ত্রী। সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকও থাকবেন এখানে। তিনি বলেন, এই ট্রাস্টের আওতায় একটি তহবিল থাকবে। সেখানে ফান্ড তৈরি করে কার্যক্রম চলবে। তহবিলে একটি সিডমানি দেওয়া হবে এবং পরবর্তীতে বাজেট থেকে বাৎসরিক একটা বরাদ্দ দেওয়া হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট নামে আরেকটি আইন রয়েছে। যে সমস্ত চলচ্চিত্র শিল্পীরা এই আইনের আওতায় থাকবেন তারা ওই আইনের আওতায় কোনো সহায়তা পাবেন না। এদিকে কেবিনেটে অনির্ধারিত আলোচনায় কোভিড-১৯ মোকাবেলায সরকারের সকল স্তরে গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে আলোচনার সময় ব্যাপকভাবে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে এই বিষয়টি সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য নির্দেশ দেন এবং মাস্ক ব্যবহার না করার কারণে মোবাইল কোর্টে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন বলেও খন্দকার আনোয়ার উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ৪৪ হাজার মিলিয়ন ডলার: বাংলাদেশের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪৪ হাজার ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি জিডিপির ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এই ঋণের মধ্যে ৩৭ শতাংশ বিশ্বব্যাংকের, ২৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ এডিবির, জাইকার ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, চীনের ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, রাশিয়ার ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, ভারতের এক দশমিক ৩ এবং অন্যান্য সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের হার ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ায় বৈদেশিক সহায়তায় অনুদানের পরিমাণ ন্যূনতম পর্যায়ে নেমেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বৈদেশিক সহায়তায় অনুদানের পরিমাণ ছিল ৮৪ থেকে ৮৬ শতাংশ, বাকিটা ছিল ঋণ। এখন সেই অনুদানের পরিমাণ নেমেছে তিন শতাংশে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০০৯-১০ সালে দেশে অনুদান এসেছে ৩০ শতাংশের মতো, ৭০ শতাংশের মতো আসল ঋণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনুদান আসছে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশের মতো, আর ঋণ হিসেবে এসেছে ৯৫ শতাংশ। ১৯৭১-৭২ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক সহায়তার আওতায় অনুদান ছিল সর্বোচ্চ ৮৪-৮৫-৮৬ শতাংশ, ঋণ ছিল ৬ থেকে ৮ শতাংশ। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে অনুদান আরও কমে গেছে, ২/৩ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। ৯৭ শতাংশেই আসছে লোন হিসেবে। আমরা আর দানের ওপর নির্ভর করছি না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রি-পেমেন্টের ক্ষেত্রে কোনোদিনই খেলাপি হয়নি বাংলাদেশ। তিনি জানান, ১৯৯৭-৯৮ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় ছিল ৭৪৮ মিলিয়ন ডলার। তখন বাংলাদেশের জিডিপির ৩০ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছিল ঋণের পরিমাণ। ২০১৯-২০ সালে বাংলাদেশের অর্থছাড়ের পরিমাণ হচ্ছে সাত হাজার ১২১ মিলিয়ন ডলার, এটা জিডিপির ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ১৯৮৯-৯০ অর্থবছরে বাংলাদেশের এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) ছিল পাঁচ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে বৈদেশিক সাহায্য ছিল তিন হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। এই এডিপির ৬৩ শতাংশ ছিল বৈদেশিক সহায়তা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে এডিপির বরাদ্দ ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে বৈদেশিক সহায়তা ছিল ১১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এডিপিতে ফরেন এইডের কন্ট্রিবিউশন ছিল ৩৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এডিপির পরিমাণ এক লাখ ৭৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, এতে বৈদেশিক সহায়তা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা। বৈদেশিক সাহায্য বাড়লেও শতকরা হিসাব নেমে এসেছে ২৯ দশমিক ২৫-এ। আমাদের নিজস্ব বিনিয়োগ এত বেড়ে গেছে যে, বাইরের লোন এলেও এটা শতাংশের হারে অনেক নিচে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করছি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০ শতাংশ পর্যন্ত সেফটি রেঞ্জ। আমরা অনেক নিচে আছি। আমাদের ঝুঁকি নেই। বৈদেশিক ঋণ যখন জিডিপির ৪০ শতাংশ বা এর বেশি হয়ে যায়, তখন ঝুঁকি থাকে। আমাদের জিডিপির তুলনায় বৈদেশিক ঋণ হলো ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সরকারি চাল পেয়েছে ১ কোটি ৬ হাজার পরিবার: ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের এক কোটি ৬ হাজার পরিবারকে সরকার চাল দিয়েছে, যার পরিমাণ দুই লাখ ৩৫ হাজার ৪২৭ মেট্রিক টন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মহামারি করোনাভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় চাল ছাড়াও নগদ ১০০ কোটি ৯৬ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ টাকা, শিশুখাদ্য কেনা বাবদ ২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা ও গো-খাদ্য কেনা বাবদ ৩ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এর বাইরেও ৫ হাজার ৯০০ বান্ডিল টিন ও গৃহনির্মাণের জন্য নগদ সহায়তা বাবদ দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এক কোটি ৬ হাজার ৮৬৯টি পরিবারের মাঝে দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন ভিজিএফ (ভালনারেবল গ্রæপ ফিডিং) চাল। এর বাইরে এক লাখ ৯৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। কোভিড ও আম্পান মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এসব বিতরণ করা হয়েছে। গত ১৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী ১৭ হাজার ৫টি দুর্যোগ সহনীয় গৃহ উদ্বোধন করেছেন, যা সাধারণ মানুষকে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। |