শনিবার ২১ জুন ২০২৫ ৭ আষাঢ় ১৪৩২
বাড়ছে মেঘনার পানি, আতঙ্কে জোয়ানশাহী হাওরের ৩০ হাজার কৃষক
Published : Monday, 18 April, 2022 at 6:00 AM, Count : 410

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে মেঘনা নদীর পানি। এতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের উপজেলার জোয়ানশাহী হাওরের কৃষকদের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক। যে কোনো সময় পানি ঢুকে তলিয়ে যেতে পারে বোরো ধান। তবে প্রতিবারের মতো এবারও মেঘনার বাড়তি পানির চাপ সামলাতে অস্থায়ীভাবে একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবে এ বাঁধ নির্মাণে উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ। ফলে যে কোনো সময় বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢোকার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীনগর, আগানগর ও সাদেকপুর ইউনিয়ন নিয়ে জোয়ানশাহী হাওরটির অবস্থান। এ হাওরে সাধারণত প্রতি একর জমিতে ৬০ থেকে ৭০ মণ ধান উৎপাদন হয়। ফলে কৃষি অর্থনীতিতে হাওরটি অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। জোয়ানশাহী হাওরের তিন হাজার একর জমিতে বছরে একবার বোরো ধান আবাদ করেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকদের স্বপ্নের ফসল বোরো ধান। এ হাওরের সঙ্গে উপজেলার ৩০ হাজার কৃষকের পরিবার জড়িত রয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, হাওরে ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকরা দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখলেও তারা রয়েছেন অবহেলিত ও বঞ্চিত। জোয়ানশাহী হাওরের মাঝে মাত্র ৩০ ফুট প্রস্থের একটি খাল রয়েছে। ওরাল খাল নামের এ খালটি মেঘনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। কিন্তু খালটিতে কোনো স্লুইসগেট নেই। এ কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানি হাওরে ঢুকে প্রায় বছরেই ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

তাদের দীর্ঘদিনের দাবি, হাওরের ফসল রক্ষায় একটি স্লুইসগেট নির্মাণের। এবার সেই দাবি পূরণে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি স্লুইসগেট নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও এখন পর্যন্ত শুধু মাটি কাটার কাজ শেষ হয়েছে। ফলে হাওরে পানি প্রবেশের আগে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শ্রীনগর ইউনিয়নের বধুনগর গ্রামের কৃষক মুর্শিদ মিয়া বলেন, অন্য বছরের মতো এবারও ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে মাটি, বাঁশ ও মাটির বস্তা দিয়ে একটি ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এ বাঁধ নির্মাণে বিভিন্ন অনিয়ম হয়েছে। স্থানীয় কৃষক মুক্তার মিয়া বলেন, প্রতি বছর সরকার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ দিলেও মাত্র দু-চার লাখ টাকা দিয়ে কোনোরকম বাঁধ নির্মাণ করে আসছে একটি মহল। ফলে বাঁধ নির্মাণের নামে বরদ্দের টাকা নয়-ছয় করে হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।

বধুনগর গ্রামের আরেক কৃষক আঙ্গুর মিয়া বলেন, যদি স্থায়ীভাবে ফসল রক্ষায় স্লুইসগেটটি নির্মাণ দ্রুত শেষ করা যায় তাহলে জোয়ানশাহী হাওরের ফসল রক্ষায় একটি স্থায়ী সমাধান হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন, আসলে জোয়ানশাহী হাওর রক্ষায় যে ডুবন্ত কাঁচা বাঁধ নির্মাণ করা হয়, সেটি তিনটি ধাপে হয়। মেঘনায় পানি বাড়ার খবর পেয়ে বাঁধটি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এ সময় বাঁধ নির্মাণকারী ঠিকাদারকে আরও মাটি ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। একই সঙ্গে বাঁধটি পাহারা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : news.bartoman@gmail.com, bartamandhaka@gmail.com