শিরোনাম: |
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত- ৪, আহত শতাধিক
|
![]() গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সহ প্রায় শতাধিক। বুধবার (১৬ জুলাই) বিকাল ৫ টার দিকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাঃ শেখ মো. নাবিল প্রাথমিকভাবে ৩ জনের নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন ইমরান তালুকদার (১৮), দীপ্ত সাহা (২৫) ও রমজান কাজী (২৪), অপর নিহতের নাম এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। ডাঃ শেখ মো. নাবিল বলেছেন, নিহত তিনজনই গুলিবিদ্ধ ছিলেন। তবে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক নিহতের বিস্তারিত পরিচয় জানাতে পারেননি। দিনভর সংঘর্ষের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসক। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জের বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত জেলাব্যাপী বুধবার রাত ৮ টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছেন। এদিকে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষের পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের কড়া পাহারায় গোপালগঞ্জ ছেড়েছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ কামরুজ্জামান আমাদের প্রতিনিধিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিকেল ৫ টার পরে তারা গোপালগঞ্জ থেকে বের হয়ে গেছেন। এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সেনাবাহিনীর এপিসিতে উঠছেন নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে, এই এপিসিতে করেই গোপালগঞ্জ ছেড়েছেন এনসিপির এই শীর্ষ নেতারা। বুধবার আনুমানিক ৩টার দিক থেকে শহরের লঞ্চঘাট এলাকা থেকে সংঘাত শুরু হয়। এ সময় পুলিশ বাঁধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। গোপালগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ৪ প্লাটুন বিজিবি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে দেখা গেছে। এ সময় নেতা-কর্মীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এনসিপি নেতাদের নিয়ে পিছু হটতে দেখা গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে এবং থেমে থেমে মহাসড়কে সংঘর্ষ হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়েছে। এছাড়া গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। সেখানে রক্ষিত তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও খাদ্য সামগ্রী লুট করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান গোপালগঞ্জ কারা কর্তৃপক্ষ। গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিক্ষুব্ধ জনতা গণমাধ্যমকে জানান সারাদেশে এনসিপি পদযাত্রা শুরু করেছে কিন্তু সার্ভিস আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুকে লংমার্চ টু গোপালগঞ্জ লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে গোপালগঞ্জবাসীকে হেয় করেছে। এছাড়া পৌর পার্কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তারা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অশালীন ভাষায় বক্তব্য দিয়ে ফেরার পথে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদেরকে প্রতিহত করার আপনার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে আমাদের অনেক ভাই নিহত ও গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। |