শনিবার ৩ মে ২০২৫ ২০ বৈশাখ ১৪৩২
মন্ত্রমুগ্ধ জগত্ পুনাখা
Published : Wednesday, 10 May, 2017 at 6:00 AM, Count : 504

পৃথিবীতে যতগুলো মন্ত্রমুগ্ধ জগতের নাম শোনা যায় তার মধ্যে অন্যতম একটি জায়গা পুনাখা। ভুটানের অসাধারণ একটি শহরের এটি। ভুটানের রাজধানী থিম্পু থেকে পুনাখার দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার। দৃষ্টিনন্দন আর চোখ জুড়ানো অভূতপূর্ব এক শহর পুনাখা। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য চমত্কার স্থাপনাও রয়েছে এখানে। তাই সময়-সুযোগ হলে ঘুরে আসতে পারেন এই মন্ত্রমুগ্ধ করা শহরে
দোচুলা: পুনাখা যাওয়ার পথে যাত্রাবিরতি হয় দোচুলায়। দোচুলা ভুটানিদের পূণ্যভূমি। অসংখ্য ধর্মীয় নকশাখচিত ছোট ছোট ধর্মীয় পতাকায় ছেয়ে আছে। মূল আকর্ষণ এখানকার বৌদ্ধমঠ। খাড়া পাহাড়ের উপর বিশাল বৌদ্ধমঠ; স্থাপত্যশৈলী আর শিল্পশৈলীর নজরকাড়া স্থাপনা। রমণার্থী আর পূণ্যার্থীদের ভিড়ে বৌদ্ধমঠটি বেশ জনসমাগম। ভূপৃষ্ট থেকে ১০,০৩১ ফুট উচ্চতায় এই দোচুলায় এসে দেখা মিলল ওই দূরে হিমালয় পবর্তশৃঙ্গের রেখা। দোচুলার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দেয় ১০৪টি চরটেন। দোচুলা থেকে পুনাখার দূরত্ব মাত্র ৪১ কিলোমিটার।
সহোদর নদী: পাহাড়ের পর পাহাড় অতিক্রম করতে করতে ক্লান্ত মন পুনাখায় এসে চঞ্চল হবে। সহোদর নদী ‘মো চু’ আর ‘ফো চু’। নদী দুটি যেখানে এসে মিশেছে ঠিক সেখানে দুই নদীকে ঘিরে পুনাখা জং। দূর থেকে নদীর সঙ্গমস্থল আর পুনাখা জংয়ের প্যানারোমা দৃশ্য অসাধারণ।
পুনাখা জং: পুনাখা জংকে বলা হয় আনন্দপ্রম প্রাসাদ। এটি আসলে পুনাখার প্রশাসনিক ভবন। ৬০০ ফুট সুদীর্ঘ এই জংটি তৈরি হয় ১৬৩৭-৩৮ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভুটানের প্রথম রাজা উজেন ওয়াংচুক এই পুনাখা জং থেকেই তার রাজত্ব পরিচালনা শুরু করেন। বর্তমানে ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ এই পুনাখা জংটি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের শীতকালীন বাসস্থান। ভুটানে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা দানের সবচেয়ে বড় আশ্রম। প্রায় তিনতলা সমান পাথর আর কাঠের পাটাতনের সিঁড়ি বেয়ে আমরা পুনাখা জংয়ের মূল স্থাপনায় প্রবেশ করলাম। মূল ভবনটিও কাঠের। ভবনের দেয়ালজুড়েই বিশ্বাস আর ধর্মীয় অনুভূতির চিত্রকর্ম। পুনাখা জংয়ে প্রবেশমাত্র দেয়ালের ডান দিকে চোখে পড়বে বিখ্যাত বৌদ্ধজ্যোতিষ চিত্র।
জ্যোতিষচিত্র: ভারত আর চীনা শিল্পের সংমিশ্রণে জ্যোতিষচিত্রটি মানুষের জীবনছবি। মানুষের জন্ম, মৃত্যু, বেঁচে থাকার গূঢ় রহস্যই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই চিত্রটিতে। মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ভিতরে ঢুকলেই একটি খোলা করিডোর। করিডোরকে ঘিরে চারিদিকে দুইতলা সমান স্থাপনা, ছোট ছোট অসংখ্য ঘর আর ঘরের প্রতিটি স্থানজুড়েই শিল্পের পরম ছোঁয়া। জংয়ের শেষপ্রান্তে রয়েছে একটি মন্দিরে ধ্যানমগ্ন বুদ্ধর সুবিশাল মূর্তি। বুদ্ধর একপাশে দ্বিতীয় বৌদ্ধ শিষ্য গুরু আর অন্যপাশে ভুটানের প্রতিষ্ঠাতা ঝাবদরাংয়ের মূর্তি।
জীবনচিত্র: মন্দিরের মূল আকর্ষণ বুদ্ধের জীবনচিত্র। মন্দিরের দেয়ালজুড়ে চিত্রকর্মগুলো ১২টি পর্বে বুদ্ধের জীবন আর বৌদ্ধধর্মের ব্যুত্পত্তির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এখানে ফটোগ্রাফির বিষয়বস্তুর অভাব নেই।
কখন যাবেন: যে কোনো সময় যাওয়া যায়। তবে মার্চ থেকে মে এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর সবচেয়ে ভালো সময়।
কীভাবে যাবেন: বাংলাদেশ থেকে প্রথমে কলকাতা যেতে হয়। সেখান থেকে সরাসরি ভুটানের পারো শহরে বিমান যায়। এছাড়া ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছে সেখান থেকে বাসে ফুন্টসোলিং যাওয়া যায়। কলকাতা থেকে সরাসরি ফুন্টসোলিং যাওয়ার বাসও রয়েছে।
কোথায় থাকবেন: ভুটানের পারো এবং থিম্পুতে প্রচুর হোটেল রয়েছে। তবে এদের তুলনায় পুনাখায় কম হোটেল-মোটেলের ব্যবস্থা আছে। তাই এই জায়গায় যেতে চাইলে আগে বুকিং করে নেয়াই ভালো।

- হাওয়াবদল ডেস্ক



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : news.bartoman@gmail.com, bartamandhaka@gmail.com