শিরোনাম: |
হ্যাক করে মুক্তিপণ দাবি
বিশ্বের ৯৯টি দেশে একযোগে সাইবার হামলা
|
![]() মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার ‘টুলস’ দিয়েই সাইবার হামলা: বিশ্বব্যাপী চালানো সাইবার হামলায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) কিছু ‘হ্যাকিং টুলস’ ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সাইবার হামলায় যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, স্পেনসহ বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশ আক্রান্ত হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। এই র্যানসমওয়্যার ভাইরাসের আক্রমণে কম্পিউটার লক (অচল) হয়ে যায় এবং মনিটরে একটি বার্তা ভেসে উঠে। এতে কম্পিউটার চালানোর জন্য ৩০০ থেকে ৬০০ ডলার চাঁদা দাবি করা হয়। ‘র্যানসমওয়্যার’ হলো এমন এক ধরনের ম্যালওয়ার বা ভাইরাস, যা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এবং ব্যবহারকারীকে প্রবেশে বাধা দেয়। অনেক সময় হার্ডডিস্কের অংশ বা ফাইল পাসওয়ার্ড দিয়ে এনক্রিপ্ট করে দেয়। পরে ওই কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ফেরত দেয়ার জন্য মুক্তিপণ বা অর্থ দাবি করা হয়। ‘ট্রোজান’ ভাইরাসের মতোই এটি এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্রাউডস্ট্রাইকের গবেষক এডাম মায়েরস জানিয়েছেন, ‘একবার এ ভাইরাস কোনো নেটওয়ার্কে কার্যকর হতে পারলে তা দ্রুত পুরো অবকাঠামোটিতে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তাকে আর কেউ আটকাতে পারে না।’ ২০১৬ সালে আত্মপ্রকাশ করে হ্যাকিং গ্রুপ ‘শ্যাডো ব্রোকারস’। জেমস বামফোর্ড, ম্যাট সুইশের মতো সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, তারা একটি ‘হুইসেল ব্লোয়ার গ্রুপ’, এনএসএ-র ভেতরেও তাদের সহযোগী রয়েছে, যাদের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস করেছে। ফাঁস হওয়া কয়েকটি নথিতে এনএসএ-র সীল দেখা গেছে। তবে ওই নথিগুলো সঠিক কিনা, তা নিশ্চিত করা যায়নি। এনএসএ বিভিন্ন হ্যাকিং টুলস ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী সাইবার নজরদারি চালিয়ে থাকে। ২০১৩ সালে গোপন নজরদারির বিভিন্ন তথ্য ফাঁস করে সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন সাবেক এনএসএ গোয়েন্দা এডওয়ার্ড স্নোডেন। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এ সাইবার হামলা সম্পর্কে অবগত। আর তা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিত্রদের জানানো হবে এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হবে। সাইবার হামলা ঠেকানোর উপায় আবিষ্কার: গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা সফটওয়্যার ‘ওয়ানাক্রাই’ র্যানসামওয়্যারের বিস্তার ‘আপাতত’ ঠেকানোর উপায় খুঁজে বের করেছেন হংকংয়ের এক সাইবার নিরাপত্তা গবেষক। টুইটারে ‘ম্যালওয়্যারটেকব্লগ’ নামধারী এই গবেষক বার্তা সংস্থা এএফপি’কে জানান, আবিষ্কারটি দুর্ঘটনাবশত হলেও বেশ কার্যকর। তিনি জানান, র্যানসামওয়্যার জাতীয় ম্যালওয়্যারটি যে নামের ডোমেইন ব্যবহার করছে, সেই নাম দিয়ে ডোমেইন রেজিস্টার করলে এর ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাচ্ছে। টুইটারে পাঠানো ব্যক্তিগত মেসেজে ‘ম্যালওয়্যারটেকব্লগ’ এএফপি’কে জানায়, মূলত হামলাকারীরা র্যানসামওয়্যার ছড়ানোর জন্য এমন সব ডোমেইন নেম ব্যবহার করছে যেগুলো রেজিস্টারড নয়। সেই ডোমেইন নেমগুলো রেজিস্টার করে ফেললেই ম্যালওয়্যারটির ছড়ানো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ উপায়ে আপাতত বিশ্বব্যাপী হামলাকারী এই ম্যালওয়্যারের বিস্তৃতি ঠেকানো গেলেও কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের যত দ্রুত সম্ভব, তাদের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করার তাগাদা দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ গবেষক। তিনি বলেন, ‘সঙ্কট এখনও কাটেনি। তারা (হামলাকারীরা) যে কোনো সময় কোড পাল্টে আবার আক্রমণের চেষ্টা চালাতে পারে।’ রেজিস্টারকৃত ডোমেইনটি বাতিল করার আগ পর্যন্ত ওই ডোমেইন থেকে কোনো ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই। তবে এর মধ্যেই দ্রুত সম্ভব সিকিউরিটি প্যাচ দিয়ে সিস্টেম আপডেট করে নেয়ার পরামর্শ দেন এই গবেষক। গতকাল শনিবারের এ সাইবার হামলা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) তৈরি একটি সফটওয়্যার টুল দিয়েই করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এনএসএ’র ফাঁস হওয়া কিছু দলিলপত্রে পাওয়া কিছু প্রাযুক্তিক ত্রুটির সূত্র ধরে সাইবার হামলাটি করা হচ্ছে বলে ধারণা করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। |