সোমবার ১২ মে ২০২৫ ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
সম্ভাবনাময় লোভাছড়ার লোভে
Published : Wednesday, 1 November, 2017 at 6:00 AM, Count : 526

সাঈদুল হক মিঠু : লোভাছড়ার লোভ যেন কোনভাবেই ভুলতে পারছি না। এখনো সে ডাকে মনের গহীনে। বলছি, সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নে অবস্থিত লোভাছড়ার কথা। যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছে হাজারও পর্যটকরা। তাই তো প্রতিদিনই হাজারও ভ্রমণপিপাসুরা এখানে ভ্রমণে আসেন। চমত্কার একটি নদীর তীর ঘেঁষে ব্রিটিশ আমলে প্রায় ১৮৩৯ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে লোভাছড়া চা-বাগান। বাগানের উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য এবং পশ্চিমে বাংলাদেশের একটি পিকনিক স্পট ও লালাখাল চা-বাগান। এখানে আপনি একবার আসলে আর একবার পরিবার নিয়ে আসতে মন চাইবেই। সুতরাং যারা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নানা ব্যস্ততার কারণে একটু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করার সময় পাচ্ছেন না। তারাও একটিবার এসে ঘুরে দেখুন লোভাছড়া। মনে হবে আপনারই অপেক্ষায় প্রকৃতি দাঁড়িয়ে আপনার সামনে। যদিও এখনও তেমনভাবে পরিচিতি পায়নি। একেবারেই নতুন আবিষ্কার বললেও খুব একটা ভুল হবে না। যেসব ভ্রমণপিপাসুরা নতুন কোনো জায়গার খোঁজে তাদের জন্য সোনায় সোহাগা এটি। বাংলাদেশের পর্যটন বিকাশে আরেকটি নতুন সংযোজন লোভাছড়া! 
পর্যটনের অপার সম্ভাবনা এই লোভাছড়ায় প্রবেশ করলেই আপনার চোখ আটকে যাবে। দেখবেন পাহাড়ের কোলজুড়ে সবুজ গাছপালার ঘন রঙে আচ্ছাদিত হয়ে আছে লোভাছড়া চা-বাগান। এর চারিদিকে সবুজের সমারোহ। সীমান্তের ওপারে মেঘালয়ের পাহাড়গুলো হাতছানি দিয়ে ডাকছে। 
দর্শনীয় স্থানের মধ্যে চা বাগান, প্রাকৃতিক লেক ও ঝরনা, ঝুলন্তসেতু, মীরাপিং শাহের মাজার, মোগল রাজা-রানীর পুরাকীর্তি, প্রাচীন দীঘি, পাথর কোয়ারী ও বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন ঘুরতে ঘুরতে কখন যে একটা দিন পেরিয়ে যাবে তা বুঝে উঠতে পারবেন না। এখানকার ঝরনার ছল ছল শব্দ শুনে পর্যটকদের মন আনন্দে নেচে ওঠে।
আবাসিক সুবিধা
লোভাছড়ায় পর্যটকদের জন্য থাকার কোনো সুব্যবস্থা না থাকলেও বাগান কর্তৃপক্ষের জন্য রয়েছে ৪টি বাঙলো। আপনি লোভাছড়ায় রাত কাটাতে পারবেন না। এজন্য দিনে দিনেই ফিরতে হবে। থাকতে হবে সিলেট শহরে।
কোথায় খাবেন
খাওয়ার জন্য কানাইঘাট বাজারে তেমন উন্নত মানের কোনো রেস্টুরেন্ট নেই। সেক্ষেত্রে লোভাছড়া যাওয়ার সময় সিলেট শহর থেকে খাবার নিয়ে যেতে হবে।
সময় নির্বাচন
চাইলে যে কোনো মৌসুমে আপনি লোভাছাড়া ঘুরতে পারেন। তবে সবুজময় লোভাছড়া বর্ষায় এক অপূর্ব রূপ ধারণ করে। বৃষ্টির দিনে লোভাছড়ার সবুজ বুকে ঝাঁপ দেয়া যায়। তবে শীতেও এপাশ-ওপাশ কুয়াশাময় পাহাড় আর বাগানে রোদের খেলা যে কোনো পর্যটকের হূদয় জয় করবে। শীত তো চলেই এসেছে! তাই সেই রোদের খেলা দেখতে চাইলে লোভাছড়াই ঘুরে আসুন এই শীতেই।
অবশিষ্ট
লোভাছড়ার পাশেই রয়েছে সুরমা, লোভা ও বরাক নদীর মিলনস্থল। তিনটি নদীর মিলন এখানে বদ্বীপের সৃষ্টি করেছে। নদীগুলোর মিলনস্থলে নদীর এক পাশের পানি খুবই স্বচ্ছ এবং অপর পাশের পানি খুবই ঘোলা। একই নদীতে দুই ধরনের পানি দেখে অনেকেই পুলকিত হন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে আপনাকে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে সিলেট আসতে হবে। এরপর লোভাছড়া যেতে হলে সিলেট শহরের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রথমে কানাইঘাট যেতে হবে। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৪৫-৫০ টাকা। তারপর কানাইঘাট বাজার থেকে নৌকাঘাটে গিয়ে সুরমা নদীর পথ ধরে লোভাছড়ার উদ্দেশে যেতে হবে নৌকায় করে। জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং রিজার্ভ নিলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। কানাইঘাট উপজেলা সদর থেকে লোভাছড়ার দূরত্ব মাত্র ৯ কিলোমিটার। উপজেলা সদর থেকে সড়ক ও নদী পথে লোভাছড়ায় যাওয়া যায়।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : news.bartoman@gmail.com, bartamandhaka@gmail.com