শিরোনাম: |
গ্রুপ বীমা বাতিল
দুই হাজার কোটি টাকার বাজার হাতছাড়া
|
![]() এর আগে ২০০৬ সালে শ্রম আইন প্রণয়নের মাধ্যমে গ্রুপবীমা বাধ্যতামূলক করে সরকার। কোন প্রতিষ্ঠানে ২০০ জনের বেশি স্থায়ী শ্রমিক থাকলে প্রচলিত বীমা আইন অনুযায়ী গ্রুপ বীমা চালু করার বিধান করা হয়। পরে ২০১৩ সালে আইনটিতের সংশোধন এনে ১০০জন শ্রমিক থাকলেই সে প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রুপবীমা বাধ্যতামূলক করা হয়। বীমা দাবির টাকা শ্রম আইনের অধীন শ্রমিকের অন্যান্য প্রাপ্যের অতিরিক্ত হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এর মাধমে বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত হয় গ্রুপ বীমার বিশাল বাজার। এ বাজারের আকার ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে বলে মনে করেন বীমাখাত সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্র মতে, বিজিএমইএর নিবন্ধিত তৈরি পোশাক কারখানার সংখ্যা ৬ হাজার ১৯৬টি। তবে নানা কারণে বন্ধ হয়েছে প্রায় দুই হাজার কারখানা। বর্তমানে এ খাতে শ্রমিক-সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে বিকেএমইএর তথ্য মতে, বর্তমানে খাতটিতে ১৬ লাখ মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুসারে দেশজুড়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে সর্বমোট ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন সর্বমোট ২ কোটি ৪৫ লাখ ৮৫০ জন শ্রমিক। তবে গ্রুপ বীমার এই বিশাল বাজারের বিপরীতে দেশের ৩২টি বীমা কোম্পানি ২০১৫ সালে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ৩১৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর সিংহভাগই ৪ কোম্পানির। এরমধ্যে মেটলাইফ আলিকো গ্রুপ বীমার প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১১১ কোটি টাকা, প্রগতি লাইফ ৮০ কোটি ২ লাখ টাকা, ডেল্টা লাইফ ৩৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং জীবন বীমা করপোরেশন ২৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। গ্রুপবীমা ব্যবস্থাপনায় বীমা কোম্পানিগুলোর অদক্ষতা ও দাবি পরিশোধে খামখেয়ালীপনার প্রচুর অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন বীমাকারীর বিরুদ্ধে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ, সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ২০১৫ সালের ৬ মে শ্রম আইনের ধারা ২৩২ এর উপধারা ৩ এর বাস্তবায়নে শ্রমবিধি প্রণয়নে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সভায় গার্মেন্ট শিল্প মালিকদের প্রতিটি কার্যাদেশের বিপরীতে প্রাপ্ত মোট অর্থের দশমিক শূন্য ৩ ভাগ টাকা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়। এক্ষেত্রে বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ কর্তৃক চালুকৃত গ্রুপবীমার বিষয়টি বিলুপ্ত করা হয়। অর্থাত্ শ্রমিকদের বীমা দাবির বিষয়টি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে পরিশোধ করা হবে। সিদ্ধান্ত অনুসারে, ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর থেকে পোশাক খাতে কর্মরত যেসব শ্রমিক মৃত্যুবরণ করবে তাদের সংশ্লিষ্ট পোশাক কারখানা বীমা দাবির আবেদন বিকেএমইএতে পাঠাবে। এসব আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় শ্রমিক কল্যাণ তহবিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃত্যুজনিত, আহত ও দূরারোগ্য ব্যধির ক্ষেত্রে বীমা দাবি পরিশোধ করবে। এরইমধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরে বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানার ৫৩ জন শ্রমিকের মৃত্যুজনিত বীমা দাবির ১ কোটি ৬ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। |