শিরোনাম: |
মহাত্মা লালন: গুরুবাদী মানবধর্মের প্রবক্তা
|
সাইফুদ্দিন সাইফুল : এই উপমহাদেশে (ভারতবর্ষ) একজন মহাসাধক ভাবুক নিষ্ঠা সত্যসন্ধানী পরম-পুরুষ মানবতাবাদী মানুষ মরমীকবি বাউল গানে দর্শনে কিংবা ভাবতত্ত্ব দেহতত্ত্ব ও সৃষ্টিতত্ত্বের ভেতরে সম্পূর্ণরূপে নতুন এক ভাবধারা আধ্যাত্মিকতার রঙে তুলে ধরলেন। সহজীয়াবাদ মরমীবাদ সুফিবাদ মোটকথা আত্মা আর পরমাত্মার মিলনের সকল ক্ষেত্রকে দর্শনকে ভাবকে নিঃস্বার্থ অপার প্রেমের দঁড়িতে একাকার করে বাধলেন শুধুমাত্র সহজ মানুষ ভজার মধ্য দিয়ে। স্রষ্টা আর সৃষ্টিকে, গুরু আর শিষ্যকে, অসীম আর সসীমকে, আদী আর অনাদীকে, জীবন আর মৃত্যুকে একই দেহে দুইয়ের বসবাস এবং তা বিশ্বাসে ভাবে ভাবনায় চিন্তায় মননে অভিন্ন পদে পদে সুরে সুরে একতারাতে তুলে আনলেন। মূলত হাওয়া অর্থাত বাতাস সন্ধানের মধ্য দিয়ে অধরাকে সহজেই ধরার পথ বাতলে দিলেন। পরম সত্তাকে অর্থাত মনের মানুষকে ধরার জানা-চেনার আর সহজ মানুষ ভজার যে আকুলতা আকাঙ্খা এবং বাসনার প্রচেষ্টাকে মরমীবাদ অর্থাত্ গুরুবাদী সাধনাতে যিনি জয়গান গেয়ে উঠেছিলেন তিনি আমাদের অতীব আপন কাছের আত্মার আত্মীয় ভাবগুরু প্রাণের প্রাণ বিশ্বাসের বিশ্বাস সাধক মহাত্মা ফকির লালন শাহ। এখানে একটি কথা জেনে রাখা ভালো যে, ‘শাহ’ একটি ফারসি শব্দ; এ শব্দের অর্থ ‘মহারাজা’। এবং ‘সাঁই’ থেকে ‘সাঁইজী’ যার অর্থ স্বামী। এই ‘সাঁই’ শব্দের আর একটি অর্থ ‘ঈশ্বর’। ফকির লালন শুধুমাত্র বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জ্ঞানী পণ্ডিত বাউল ভাবুকই ছিলেন না, তিনি একজন বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক, বিদ্রোহী, কবি, দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক মানুষ ছিলেন। আবার তিনি অধিক যুক্তিবাদী বাস্তববাদী ঘরানার মানুষ ছিলেন। তাইতো সাইজী বললেন- ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান-নারী লোকের কী হয় বিধান, বামুন চিনি পৈতে প্রমাণ-বামনী চিনি কিসেরে....’ তিনি আমাদের কাছে সমাজের কাছে মানুষের কাছে ভাব-জগতে ফকির লালন, মহাত্মা লালন, লালন শাহ, দরবেশ লালন ও লালন সাঁই নামে পরিচিত এবং চিন্তাশীল ভাবুক পণ্ডিত বাস্তববাদী হিসেবেও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন। ফকির লালন শাহ একদিকে যেমন তিনি গুরুবাদী মানবধর্মের আধ্যাত্মিক ও ভাববাদী মানুষ ছিলেন, আবার তিনি সৃষ্টিতত্ত্ব ভাবতত্ত্ব নূরতত্ত্ব নবীতত্ত্ব রসুলতত্ত্ব কৃঞ্চলীলা রসতত্ত্ব নিতাইলীলা গৌরলীলা গোষ্ঠলীলা গুরু-শিষ্য নিয়ে ইত্যাদি অসংখ্য অসাধারণ সৃষ্টিশীল অমর ভাব গান রচনা করেছেন। এই জন্যে লালনকে বাঙলার বাউল ভাব মরমী আধ্যাত্মিক গানের একজন অন্যতম প্রধান অগ্রদূত গণ্য করা হয়। এছাড়া তিনি গীতিকার সুরকার ও গায়ক হিসেবেও অনেক অনেক খ্যাতি ও মর্যাদা লাভ করেছেন। মূলত ফকির লালন শাহ ছিলেন একজন সিদ্ধিপুরুষ। আর এই সিদ্ধিপুরুষ মহামানবের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাঙলা সাহিত্যের শক্তিমান সাহিত্যিক লেখক পন্ডিত ও গবেষক আহমদ শরীফ বলেছেন- ‘ভেদবুদ্ধিহীন মানবতার উদার পরিসরে সাম্য ও প্রেমের সুউচ্চ মিনারে বসেই লালন সাধনা করেছেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাধক ও দার্শনিকদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে তিনি সাম্য ও প্রেমের বাণী শুনিয়েছেন। তিনি রুমী, জামী ও হাফিজদের সগোত্র এবং কবীর, দাদু ও রজবের উত্তরসাধক। লালন কবি, দার্শনিক, ধর্মবেত্তা ও প্রেমিক। তার গান লোকসাহিত্য মাত্র নয়, বাঙালির প্রাণের কথা, মণীষার ফসল ও সংস্কৃতির স্বাক্ষর।’ আর তাই বাঙালির হাজার বছরের সাহিত্য, সঙ্গীত, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সবচেয়ে বড়ো উপাদানটি হচ্ছে আমাদের ফকির লালন শাহ। ফকির লালনকে এই ভারতীয় উপমহাদেশের ভেতরে সবচেয়ে প্রভাবশালী একজন আধ্যাত্মিক সাধক হিসেবে ধরা হয়। তিনি ছিলেন ত্রিকালদ্রষ্টা কালজয়ী মহাপুরুষ। শুধু তাই নয়, তিনি একাধারে বাউল সাধক, সাম্য ও মানবতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, বাউল গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। এমনকি তাকে বাউল সম্রাটও বলা হয়ে থাকে। এখানে একটি বিষয় ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে, আমরা জানি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে ‘মহাত্মা’ বলা হয়। কিন্তু গান্ধীর এই মহাত্মা উপাধি দেয়ার প্রায় পঁচিশ (২৫) বছর আগে বাউল সাধক ফকির লালনকে ‘মহাত্মা’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ইতিহাস সাক্ষী ফকির লালনের অতিব কাছের ও পরিচিত মানুষ ‘বিষাদসিন্ধুর রচয়িতা সু-সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত পাক্ষিক পত্রিকা ‘হিতকরী’তে (লালনের দেহ ত্যাগের ১২ দিন পর প্রকাশিত ) রাইচরণ নামের এক লেখকের একটি বিশেষ রচনায় ফকির লালনকে এই উপমহাদেশে সর্বপ্রথম ‘মহাত্মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। অবশ্য এ কথা সত্য যে, ফকির লালন ব্যক্তিগত জীবনে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন না। তবে তিনি নিরক্ষর ছিলেন না মোটেই। কেননা, লালন যে নিরক্ষর ছিলেন এ কথার চরম প্রতিবাদ ও বিরোধিতা করেছেন পল্লীকবি জসীমউদ্দীন। অবশ্য একথা ঠিক যে, ফকির লালন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চ-শিক্ষা অর্জন করেননি; তবে তিনি নিজ গুনে নিজ চেষ্টাবলে নিজ সাধনাবলে বিভিন্ন ধর্ম, মানুষ ও মানুষের দেহ, সমাজ-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য বিভিন্ন আচার-পদ্ধতি এবং সৃষ্টিরহস্য ও সৃষ্টিকর্তা বিষয়ে অঢেল জ্ঞানার্জন করেছেন। আর তারই প্রতিফলন দেখা যায় তার রচনা প্রতিটি মহতী গানের ভেতরে। তার গানে আধ্যাত্মিকতা মানবতা মরমীবাদের ভাবধারার প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। কিন্তু যে বিষয়টি অবাক করার মতো তা হলো, তার গানে একেবারে সহজ সরল আঞ্চলিক সাবলীল শব্দ কথা প্রয়োগ দেখা যায়, এবং সবকটি গানে অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ ভাবধারা বিদ্যমান। তিনি মূলত তার গানের ভেতরে বাঙলা শব্দের পাশাপাশি আরবি ফারসি ও সংস্কৃতির অসংখ্য শব্দ ব্যবহার করেছেন। এ থেকে প্রমানিত হয় যে, তিনি নিরক্ষর ছিলেন না। বিভিন্ন ভাষা শব্দের উপর তার পান্ডিত্য ছিল। লালনের গানের মধ্য দিয়ে একান্তে মানবতা আধ্যাত্মিকতা মরমী সাম্য শান্তি অসাম্প্রদায়িক প্রেমের অপার আদর্শ কথা চিন্তা-চেতনা ভাব সুর প্রকাশ পেয়েছে। যতটুকু জানা যায় যে, ফকির লালন শাহ তিনি তার জীবদ্দশায় প্রায় দু’হাজারের মতো পদ অর্থাত্ আধ্যাত্মিক গান রচনা করেছিলেন। আবার কেউ কেউ বলে থাকেন যে, তিনি ১০ হাজারের মতো গান রচনা করেছেন। যদিও এই সংখ্যা কিংবা আসলে তিনি কতো গান লিখেছিলেন তা নিয়ে এখনো বেশ বিতর্ক আছে। তবে লালনকে নিয়ে যারা এপর্যন্ত জ্ঞানগর্ব লেখালেখি ও গবেষণা করেছে বিশেষ করে তাদের মধ্যে ড. আশরাফ সিদ্দিকী, ড. উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, রিয়াজুল হক, আবুল আহসান চৌধুরী ও আনোয়ারুল করিম প্রমুখ বিশিষ্ট গবেষকরা ফকির লালনের গান প্রায় সহস্রাধিক বলে নিজেদের দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করেছেন। যেসব গান বর্তমান পর্যন্ত স্বমহিমায় বিদ্যমান ও সমান গুরুত্ব বহন করে চলেছে। ফকির লালন শাহ নিজে হাতে তিনি তার গান কিংবা গানের কোনো পাণ্ডলিপি লিখেছেন তা এখনো পাওয়া যায়নি। অথবা তার কোনো প্রমানিত হয়নি। তিনি মূলত মুখে মুখে পদ রচনা করতেন। তিনি যখন গান বাধতেন তখন ‘পোনা মাছের ঝাক এসেছে’ এই কথা বলতেন। আর তার ভক্ত-শিষ্যরা গুরুর মুখে মুখে রচিত গান শুনে এবং সংগ্রহ করে তা লিপিবদ্ধ করতেন। এবং নিজেরাও গাইতেন। বিশেষ করে লালন শাহের শিষ্য ফকির মানিক শাহ এবং ফকির মনিরুদ্দিন শাহ লালনের গানের লিপিকর হিসেবে অধিক পরিচিত। কুষ্টিয়া ছেউড়িয়ায় ফকির আনোয়ার হোসেন মন্টু শাহ (মৃত) নামে একজন বাউল সাধক তিনি জীবনকালে ‘লালন-সঙ্গীত’ (১, ২, ৩ প্রকাশকাল-১৯৯৮ সাল) এই শিরোনামে তিন খণ্ডের গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। মূলত এই তিন খণ্ডের বইয়ের মধ্যে লেখক তিনি ফকির লালনের সরাসরি একজন শিষ্য মনিরুদ্দীন শাহের সংগৃহীত লালন সঙ্গীত প্রকাশ করেছেন। আর এভাবেই লালনের রচনা গান দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং মানুষকে আকৃষ্ট করছে। লালনের গানের ভেতরে এমন এক ধরনের অমিয় জাদু ভাব আবেদন সরলতা মধুপ্রেম চেতনরস রয়ে গেছে যা আমাদের এই কথিত সমাজে শিক্ষিত অশিক্ষিত ভাবুক চিন্তাশীল এবং সাধারণ মানুষ থেকে আরম্ভ করে সব শ্রেণীর মানুষদেরকে একটা আলাদা ভিন্ন চিন্তা ও ভাবনার জগতে নিয়ে যায়। কেননা, লালন গানের মধ্যে তত্ত্বকথা ভাবকথা চরমভাবে বিদিত ও প্রকাশিত। তার গানে সাম্য শান্তি ও মানবমুক্তির সন্ধান মেলে। এই মানবতাবাদী মতাদর্শ গানে গানে প্রচার করতে গিয়ে লালন ও তার অনুসারিদের উপর ঢের অত্যাচার জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে। ফকিরদের মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে, একতারা ভেঙে খানখান করা হয়েছে। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তিদ্বয় এবং ধর্মব্যবসায়ীরা মিলে ফকির লালন ও তার শিষ্যদের বিরুদ্ধে যতো নোংড়া মিথ্যাচার ও কুিসত বিষোদগার করেছে। তার পরেও আজ একথা জোর গলায় বলতে পারি যে, বাঙলা সাহিত্যে, বাঙলা কাব্যে, বাঙলা গানে, মানবজীবনে, মানবসমাজে, চিন্তা-চেতনায়, ভাবনায় ও দর্শনে মহাত্মা ফকির লালনের মহতী গান এবং অবদান অন্যদের চাইতে অনেক অনেক বেশি এবং অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। বিগত খ্রিস্টাব্দ ১৮৯০ ( ১৭ অক্টোবর, শুক্রবার ) এবং বঙ্গাব্দ ১২৯৭ (১ কার্তিক) সালে লালন সাইজী ১১৬ বছর বয়সে ছেঁউড়িয়ার নিজ আখড়া বাড়িতে তার কাছের শিষ্যদের উদ্দেশ্যে ‘আমি চলিলাম’ একথা বলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পূর্বে (এ সময় আখড়ায় দোল পূর্ণিমার উত্সব চলছিলো) তিনি তার প্রিয় শিষ্য-ভক্তদের বলেছিলেন যে, - ‘আমি দেহত্যাগ করলে আমার এই ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ির সাধন কক্ষ বা ‘হকের ঘরে’ আমার মৃতদেহ সমাহিত করিও।’ লালন শাহ দেহরাখার পর তার কথা মতো তার সাধন কক্ষে সমাহিত করা হয়। বর্তমানে কুষ্টিয়া ছেঁউড়িয়ায় সাইজীর সমাধীস্থলই হলো ‘হকের ঘর’। সাঁইজী যেদিন এই ধরাধাম ছেড়ে পরলোকে পাড়ি জমালেন ঠিক তার পনেরো (১৫) দিন পর প্রকাশিত এই পাক্ষিক ‘হিতকরী’ কাগজে সম্পাদকীয় নিবন্ধে ফকির লালন সম্পর্কে বলা হয়- ‘ইহার জীবনী লিখিবার কোনো উপকরণ পাওয়া কঠিন, নিজে কিছুই বলিতেন না, শিষ্যেরাও তাহার নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশত কিছুই বলিতে পারে না।’ এছাড়া সুধীর চক্রবর্তী লালনের পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন- ‘কাঙাল হরিনাথ তাকে (ফকির লালন) জানতেন, মীর মশাররফ চিনতেন, ঠাকুরদের হাউসবোটে যাতায়াত ছিল, লেখক জলধর সেন বা অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় তাকে সামনা সামনী দেখেছেন কতবার, গান শুনেছেন, তবু জানতে পারেননি লালনের জাতপরিচয়, বংশধারা বা ধর্ম।’ ফকির লালনের প্রথম জীবন রচয়িতা বসন্ত কুমার পাল লালনের মৃত্যুর পর প্রকাশিত ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় ‘মহাত্মা লালন’ এই শিরোনামে একটি নিবন্ধে বলেছেন- ‘সাঁইজি হিন্দু কি মুসলমান একথা আমিও স্থির বলিতে অক্ষম।’ পাশাপাশি বাঙলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ রবীন্দ নাথ ঠাকুরও বলেছেন- ‘লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের সমন্বয় কী যেনো একটা বলতে চেয়েছেন, আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’ অতএব, এ জাতীয় বহু তথ্য মন্তব্য অভিমত ইতিহাস উপস্থাপন করা যাবে যাতে করে প্রমাণিত হবে যে, লালন কোন ধর্মের কোন জাতের কোন গোত্রের এটা মুখ্য নয়; মূলত তিনি অসাম্প্রদায়িক আধ্যাত্মিক সাধক মরমী কবি ও লোভ লালসা কাম ক্রোধ হিংসা-বিদ্বেষ সকল অহঙ্কার বৈষম্য ভেদাভেদ জাত-পাত গোত্র বর্ণ মুক্ত একদম একজন সিদ্ধি মানুষ ছিলেন। আর আমরা এভাবেই ফকির লালনকে জীবনে চেতনায় ভাবনায় মননে সৃজনশীলতায় দেখতে চাই, আধ্যাত্মিকতায় মরমীতায় পরম বিশ্বাসে চিনতে ও জানতে চাই এবং মন-মন্দিরে সাঁইজী রূপে শ্রদ্ধা ভালোবাসার প্রেমময় একেবারে স্থান দিতে চাই। তবেই ফকির লালনকে যথাযথ মূল্যায়ন মর্যাদা ও তার প্রতি সম্মানবোধ দেখানো হবে। (চলবে...) |