শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫ ৩ শ্রাবণ ১৪৩২
বাঙালির ঐতিহ্যে হেমন্ত ও নবান্ন
Published : Monday, 21 November, 2016 at 6:00 AM, Count : 1204

শিহাব খান : হেমন্ত এলেই দিগন্তজোড়া প্রকৃতি ছেয়ে যায় হলুদ-সবুজ রঙে। এই শোভা দেখে কৃষকের মন আনন্দে ভাসতে থাকে। কারণ, কৃষকের ঘর ভরে উঠবে গোলা ভরা ধানে। বছর ঘুরে আবার এসেছে অগ্রহায়ণ। বাঙালির প্রধান কৃষিজ ফল কাটার ক্ষণ। স্মরণাতীত কাল থেকে বাঙালির জীবনে পয়লা অগ্রহায়ণকে বলা হয়ে থাকে বার্ষিক সুদিন। এ দিনকে বলা হয় নবান্ন। নবান্ন হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ। নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করা হয় পিঠা, পায়েস, ক্ষীরসহ হরেক রকমের খাবার; বাড়ির আঙিনা নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে।

হেমন্ত ষড় ঋতুর চতুর্থ ঋতু। যা কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের সমন্বয়ে গঠিত। শরতের পর এই ঋতুর আগমন। হেমন্তের পরে আসে শীত। তাই হেমন্তকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস।

কৃত্তিকাআর্দ্রা এ দুটি তারার নামানুসারে নাম রাখা হয়েছে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের। মরা কার্তিকের পর আসে সর্বজনীন লৌকিক উত্সব নবান্ন। অগ্রহায়ণ এ দুঅংশের অর্থ যথাক্রমে ধানকাটার মওসুম। সম্রাট আকবর অগ্রহায়ণ মাসকেই বছরের প্রথম মাস বা খাজনা আদায়ের মাস ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এক সময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। কারণ ধান উত্পাদনের ঋতু এই হেমন্ত। বর্ষার শেষ দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে ওঠে। আর হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে ধান পরিপক্ব হয়। হেমন্তের ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উত্সবের সূচনা হয়। নবান্ন (নতুন অন্ন) পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোত্সব। নবান্ন হলো নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উত্সব। যা সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর অনুষ্ঠিত হয়।

বাঙালির ঐতিহ্যবাহী শস্যোত্সব নবান্ন উত্সব। বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উত্পাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সব আচার-অনুষ্ঠান ও উত্সব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। নবান্ন শব্দের অর্থ নতুন অন্ন। নবান্ন ঋতুকেন্দ্রিক একটি উত্সব। হেমন্তে নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় এ উত্সব পালন করা হয়। এই উত্সব পালিত হয় অগ্রহায়ণ মাসে। অগ্র অর্থ প্রথম। আর হায়ণ অর্থ মাস। এ থেকে সহজেই ধারণা করা হয়, একসময় অগ্রহায়ণ মাসই ছিল বাংলা বছরের প্রথম মাস। হাজার বছরের পুরোনো এই উত্সব সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক, সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী এবং সবচেয়ে প্রাচীনতম মাটির সঙ্গে চিরবন্ধনযুক্ত।

এ ঋতুতে ফোটে গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, হিমঝুরি, দেবকাঞ্চন ও রাজ অশোক প্রভৃতি। নবান্ন অথবা হেমন্ত ঋতুর শান্ত প্রকৃতি অনেক কবি-সাহিত্যিকের রচনায় ধরা পড়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুফিয়া কামাল, জসীমউদদীন, জীবনানন্দ দাশ ও গোলাম মুস্তফা প্রমুখ। কাজী নজরুল ইসলামের অঘ্রাণের সওগাত কবিতায় নবান্নের চিত্রটি বেশ উপভোগ্য। বিশ্বকবি তার কবিতায় বলেছেন-

আজি হেমন্তের শান্তি ব্যাপ্ত চরাচরে/

জনশূন্য ক্ষেত্র মাঝে দীপ্ত দ্বিপ্রহরে/

শব্দহীন গতিহীন স্তব্ধতা উদার/

রয়েছে পড়িয়া শ্রান্ত দিগন্ত প্রসার/

স্বর্ণশ্যাম ডানা মেলি।/

বাংলা কবিতা পথ পরিক্রমায় একেক দশকে একেক চরিত্র নিয়ে অগ্রসর হলেও স্বদেশের রূপ-বৈচিত্র্য রূপায়নে অনড়। আর এই কাজে কবিদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এ দেশের ঋতুবৈচিত্র্য। জীবনানন্দ দাশের কবিতার প্রধান অনুষঙ্গ হেমন্ত।

হেমন্তের সোনালি ধান আর তার শিশির বিন্দু আমাদের প্রকৃতির এক অপরূপ দৃশ্য। সোনালি ধানের প্রাচুর্য আর বাঙালি সংস্কৃতির বিশেষ অংশ নবান্নকে প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ফুটে উঠেছে দারুণভাবে। তিনি লিখেছেন, চারিদিকে নুয়ে পড়ে ফলেছে ফসল/তাদের স্তনের থেকে ফোঁটা ফোঁটা পড়িতেছে শিশিরের জল,/প্রচুর শস্যের গন্ধ থেকে-থেকে আসিতেছে ভেসে/পেঁচা আর ইঁদুরের ঘ্রাণে ভরা আমাদের ভাড়ারের দেশে। পুনর্বার ফিরে আসার আকুতি ধ্বনিত হয়েছে জীবনানন্দ দাশের একটি কবিতায়, আবার আসিব ফিরে ধান সিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়/ হয়তো মানুষ নয় হয়তো শঙ্খচিল শালিখের বেশে;/ হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে

প্রকৃতির বিচিত্র এ রূপের বর্ণনা দিয়েছেন এ দেশের সব কবি-সাহিত্যিক। তাই হেমন্ত আর নবান্ন বাঙলির এক ঐতিহ্যগত রূপ।

নবান্নের প্রথাসমূহ : নবান্ন অনুষ্ঠানে নতুন অন্ন পিতৃপুরুষ, দেবতা, কাক ইত্যাদি প্রাণিকে উত্সর্গ করে এবং আত্মীয়-স্বজনকে পরিবেশন করার পর গৃহকর্তা ও পরিবারবর্গ নতুন গুড়সহ নতুন অন্ন গ্রহণ করেন।

কাকবলী : নতুন চালের তৈরি খাদ্যসামগ্রী কাককে নিবেদন করা একটি বিশেষ লৌকিক প্রথা। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কাকের মাধ্যমে ওই খাদ্য মৃতের আত্মার কাছে পৌঁছে যায়। এই নৈবেদ্যকে কাকবলী বলে। অতীতে পৌষসংক্রান্তির দিনও গৃহদেবতাকে নবান্ন নিবেদন করার প্রথা ছিল।

একদা অত্যন্ত সাড়ম্বরে নবান্ন উত্সব উদযাপিত হতা, সব মানুষের সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক উত্সব হিসেবে নবান্ন উত্সব সমাদৃত ছিল। ১৯৯৮ সন থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে নবান্ন উত্সব উদ্যাপন শুরু হয়েছে। জাতীয় নবান্নোত্সব উদযাপন পর্ষদ প্রতি বছর পহেলা অগ্রহায়ণ তারিখে নবান্ন উত্সব উদযাপন করে। ইদানীং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে আনুষ্ঠানিক নবান্ন উত্সব উদযাপিত হচ্ছে।

আমাদের গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়ও নবান্ন উত্সব পালিত হয়। নবান্ন উত্সবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় নবান্ন উত্সব। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এ যেন সত্যি হূদয়ের বন্ধনকে আরও গাঢ় করার উত্সব।

কৃষকের মাঠে এখন সোনারঙা ধানের ছড়াছড়ি। সারা দেশেই আমন ধান কাটার উত্সব শুরু হয়ে গেছে। কৃষক রাশি রাশি ভারা ভারা সোনার ধান কেটে নিয়ে আসে ঘরে। ধান ভাঙার গান ভেসে বেড়ায় বাতাসে, ঢেঁকির তালে মুখর হয় বাড়ির আঙিনা। অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় এখন আর ঢেঁকির তালে মুখরিত হয় না। তার পরও নতুন চালের ভাত নানা ব্যঞ্জনে মুখে দেয়া হয় আনন্দঘন পরিবেশে। তৈরি হবে নতুন চালের পিঠা, ক্ষীর-পায়েস। কৃষক-কৃষাণীরা নবান্নের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে নবান্নে বাড়ির জামাইকে নিমন্ত্রণ করা হয়। মেয়েকেও বাপের বাড়িতে নাইয়র আনা হয়। নবান্ন আর পিঠেপুলির উত্সবের আনন্দে মাতোয়ারা হয় সবাই। তাই অগ্রহায়ণ এলেই সর্বত্র ধ্বনিত হয়, আজ নতুন ধানে হবে রে নবান্ন সবার ঘরে ঘরে। নতুন ধানের ভাত মুখে দেওয়ার আগে মিলাদ পড়ানো হয়। মসজিদে শিন্নি দেয়ার রেওয়াজও আছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের কৃষকের ঘরে পূজার আয়োজনও চলে।

এছাড়া নবান্নের অন্যতম প্রাণ গ্রামীণ মেলা। হরেক রকমের দোকান নিয়ে বসে গ্রামীণ মেলা। তবে গ্রামীণ মেলা এখন আর শুধু গ্রামেই হয় না; শহরেও ব্যাপকভাবে আয়োজিত হয়। এই মেলায় পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের পিঠা, মিষ্টি, সন্দেশ, মণ্ডা-মিঠাই, খেলনা-পুতুল, মাটির জিনিসপত্র আর বসে বাউল গানের আসর। নবান্ন উত্সবকে ঘিরে গ্রাম-গঞ্জে সব শ্রেণীর মানুষের ঢল নামে। নাচ আর গানে মুখরিত হয় মেলাপ্রাঙ্গণ। প্রকৃতি আর পরিবেশের মধ্যে আত্মহারা হয়ে ওঠে বাঙালিমানস। শুধু গ্রামেই নয়, নগরেও নবান্ন উত্সব হয়। এবারও রাজধানীতে নবান্ন উত্সব উদযাপিত হয়েছে। গ্রামীণ নবান্ন আয়োজনের মধ্যে বুড়িচং উপজেলায় কর্মসূচির কথা উল্লেখ করছি। পহেলা অগ্রহায়ণ সেখানকার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী নবান্ন উত্সবের নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এছাড়াও সেখান কৃষক-কৃষাণীরা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে দিন করে ১ থেকে প্রায় ১৫ অগ্রহায়ণ পর্যন্ত নাবান্ন উত্সবের আমেজ থাকবে। এক গ্রাম থেকে সারি বদ্ধ হয়ে দাওয়াতি লোকজন অন্য গ্রামে নবান্নের দাওয়াত খেতে যাবে।

এবার বাম্পার ফলনের খুশিতে দীর্ঘ দিন পরে হলেও একটু আলাদাভাবে সবাই নবান্ন উত্সব পালন করেছে। উঠতি আমন ধানের বাজার কৃষকের মন মতো হওয়ায় তাদের আনন্দ আরও বেড়ে গেছে। তারা ধান বিক্রি করে বধূ পোলাপানসহ সবার নতুন কাপড় চোপড় কিনে বাড়তি টাকা দিয়ে নবান্ন উত্সব পালন করতে পারবে। এক কালের হারিয়ে যাওয়া বাংলার ঐতিহ্য নবান্ন উত্সব আবারও বাঙালির ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে। গ্রামে গ্রামে মাটির ঘরবাড়ি লেপা মোছার ধুম ফেলেছে বাংলার বধূরা। কুমিল্লায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবান্ন উত্সব পালিত হয়েছে। পহেলা অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ জেলার বিভিন্ন স্থানে এ দিবস উদযাপন করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল ধান কাটা, মাড়াই, পিঠা উত্সব, সবজির মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। সদর দক্ষিণ উপজেলার সুবর্ণপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও পাশের ধান ক্ষেতে কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে কৃষক, কৃষাণী, স্কুল শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

নানা আয়োজনে বান্দরবানে পালিত হয়েছে নবান্ন উত্সব। এ উপলক্ষে সকালে জেলা প্রশাসকের প্রাঙ্গণ  থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। জেলার আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আলোচনা সভা ,শিশু সমাবেশ, বিস্কুট দৌড়, মোরগ লড়াই ও যেমন খুশি তেমন সাজ প্রতিযোগিতা ও আনন্দ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পিঠাপুলির পসরা আর সাংস্কৃিতক অনুষ্ঠানমালায় নানা আয়োজনে ঝালকাঠিতে নবান্ন উত্সব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষার্থীরা আবহমান বাংলার নানা ঐতিহ্যবাহী পিঠার পসরা সাজিয়ে প্রদর্শনী করে। এছাড়া নাচে আর গানে পহেলা অগ্রহায়ণকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন জেলা-উপজেলাপর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এবং কৃষকরা নানা আয়োজনে এ উত্সবকে ঘিরে নানা আয়োজনে মেতে ওঠে। এ থেকে প্রতীয়মান যে, গ্রামবাংলা থেকে এখনো হারিয়ে যায়নি ঐতিহ্যবাহী এ নবান্ন উত্সব। তাই হেমন্ত ঋতু হিসেবে যেমন সমৃদ্ধ; তেমন সমৃদ্ধ করে আমাদের প্রকৃতি। হেমন্ত তার রূপবৈচিত্র্য নিয়ে ফিরে ফিরে আসুক বাংলায়, চিরন্তন মাধুর্য নিয়ে আসুক যুগে যুগে।

 

লেখক : কলাম লেখক



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : news.bartoman@gmail.com, bartamandhaka@gmail.com