শিরোনাম: |
চৌহালীতে চার বছরে ৮২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যমুনায় বিলীন
|
আর ভেঙে যাওয়া এ স্কুলগুলোর অধিকাংশের ঠাঁই হয়েছে বাড়ির উঠান অথবা ওয়াপদাবাঁধে খোলা আকাশের নিচে। রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সেখানেই ক্লাস করতে হচ্ছে। এছাড়া এখনও ভাঙনের মুখে রয়েছে ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এদিকে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, বিলীন হয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন ভবন নির্মাণে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। জানা যায়, এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই যমুনা নদী ভয়ঙ্কর মূর্তি ধারণ করে ক্রমাগতভাবে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, দোকান পাট, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ ১৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গ্রাস করে। রাক্ষুসী যমুনার দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা তাণ্ডবে গত চার বছরে বসতিসহ ১৭ হাজার একর আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। এছাড়া বাঘুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ মুসলিমিয়া দাখিল মাদরাসা, চৌবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাঁপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হিজুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর ছলিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সম্ভুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চৌবাড়িয়া উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চৌবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অ্যয়াজি ধুপুলীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পয়লা পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরাইল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বৃদাশুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৃদাশুরিয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মহিলা ফাযিল মাদরাসা, এসবিএম কলেজ, চৌবাড়িয়া কারিগরি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদরাসা, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় ৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আরও অন্তত ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্তমানে নদী ভাঙনের মুখে রয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেঙে যাওয়া ঘরের চালের টিন দিয়ে কোনো রকম ছাপড়া তুলে চলছে পাঠদান। এতে রোধ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। সরেজমিন হাঁপানিয়া অ্যান্ড হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৫-২০০৬ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) বরাদ্দকৃত ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একাডেমিক ভবন যমুনার ভাঙনে বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়, ভবনটি রাক্ষুসী যমুনা এভাবেই গ্রাস করায় ৩০৩ জন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে উপজেলার জাহাঙ্গীর ফিরোজ জানান, যমুনায় বিলীন হয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের জন্য অন্য এলাকায় ঘর তুলে পাঠদানের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে চৌহালী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আবদুর রহিম জানিয়েছেন, বিলীন হয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এবছর বিলীন হয়ে যাওয়া স্কুলগুলোর নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ সাইফুল হাসান বলেন, ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে। আর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শিক্ষা খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে পাঠদানের বিষয়টি সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। |