শিরোনাম: |
পরিচালক রাবেয়া বসরী’র পরিকল্পনায়
স্বাস্থ্যসম্মত চিকিৎসা সেবায় বদলে যাচ্ছে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
|
![]() ১৪ ই আগস্ট (সোমবার) সকালে সরজমিনে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে গেলে দেখতে পাওয়া যায় ৩১ শয্যর এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছে প্রায় ৭০ এর অধিক। এত রোগীর চাপ সামাল দিতে কতৃপক্ষকে তাই নিতে হচ্ছে বাড়তি দায়িত্ব । ২৫ জন নার্স ও ৯ জন কনসালটেন্ট দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসা সেবা ভালো হওয়ার কারণে রোগী বেড়ে যাওয়ায় এখানে লোকবল বাড়ানোর প্রয়োজন বলে ভূক্তভোগী রোগীরা মনে করছেন। সরজমিনে গিয়ে জানা যায় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার ভিতরে রয়েছে গর্ভবতী মায়েদের জন্য নরমাল ডেলিভারী এবং নরমাল ডেলিভারীল পাশাপাশি সিজারে ঝুকিঁপূর্ণ মায়েদের জন্য ডেলিভারির ব্যাবস্থা। এনডিসি কর্ণার যার মাধ্যমে রোগী ১ মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে ঔষুধ পাবে চিকিৎসার পাশাপাশি । বিনামূল্যে ডায়বেটিকস পরীক্ষা, চক্ষু সেবা, যক্ষা ও কুষ্ট রোগীদের জন্য চিকিকৎসার পাশাপাশি বিনামূল্যে ঔষুধ প্রদান। রয়েছে ব্লাড টেষ্ট, এক্সরে, ইসিজি, আলটাসনোগ্রাফি বিনামূল্যে করার ব্যাবস্থা। বিনামূল্যে টিকা কার্যক্রম (ইপিআই) ব্যাবস্থা। রয়েছে অপুষ্টি বাচ্চাদের জন্য আলাদা কর্ণার যার মাধ্যমে এগুলো বাচ্চাদের জন্য আলাদা চিকিৎসা ব্যাবস্থা ও পুষ্টির যোগান দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম। এই হাসপাতালে বিনামূল্যে রয়েছে রোগীদের জন্য ভায়া টেষ্ট । মহিলাদের জন্য রয়েছে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার শন্কাক্তকরণে আলাদা চিকিৎসা ব্যাবস্থা। এই হাসপাতালে জ¦র এবং পেট ব্যাথা নিয়ে ভর্তি আছেন পবা উপজেলার দর্শনপাড়া ইউনিয়নের মাজেদা বেগম (৬২) । তার সাথে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কথা বললে তিনি বলেন, “আজকে ৬দিন থেকে আমি এই হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমার পেট ব্যাথা যখন সইতে পারছিলাম না তখন আমি আমার স্বামী কে বলেছিলাম আমাকে তুমি রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করো কিন্তু আমার স্বামী আমাকে বললো রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি হতে হবে না আমাদের দারুশা মেডিকেল (পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) ভর্তি করবো। এখানে নাকি আগের চেয়ে চিকিৎসা সেবা ভালো হয়েছে। আমি এখানে ভর্তি হওয়া আজকে ৬ দিন হয়ে গেলো এবং এখানে ভর্তি হওয়ার পরে দেখতে পেলাম যে সত্যিই এখানে চিকিৎসা সেবা অনেক ভালো। এই হাসপাতালের নার্স এবং ডাক্তাররা আমাদের ভালো চিকিৎসা দিচ্ছে। এই হাসাপাতাল মোটামুটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আছে। আমি এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবায় সন্তুষ্ট”। হাসপাতালের চিকিৎসা নিচ্ছেন হুজুরিপাড়া ইউনিয়নের ৭০ বছর বয়সী কালাম আলী নামের এক বৃদ্ধ। তার কাছে চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন. “বাবা বাচমুঁ আর কয়দিন, এই বুইড়া বয়সে চইলতে পারিনা । ব্যাটাদের বুললুম যে বাবা হামি বুধহয় মইর্য যাবো মাথার যন্ত্রণায়। ব্যাটারা হামার কথা শুনে না তাদের ট্যাকা খরচ হবি তাই। হামি মাথার যন্ত্রণা সইতে না পাইরা এখানে একা একা চইল্যা আইছি । পরে হামি যখন এই মেডিকেলে ভর্তি হইলাম এহানকার ডাক্তার, নার্স আপারা হামাক ভালোই যন্ত কইরা চিকিৎসা দিচ্ছে । হামার মাথার ব্যাথাও কমছে। আমি আল্লাহপাকের কাছে দুয়া করি এ্ই মেডিকেলে সব ডাক্তার,নার্স আপাদের মঙ্গল করুক”। এই বিষয়ে জানতে চাইলে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পরিচালক রাবেয় বসরীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, “আমি যখন সর্বপ্রথম এই হাসপাতালের দায়িত্ব নিয়ে আসি তখন এই হাসপাতালের সামনে যেই মাঠটি দেখতে পাচ্ছেন সেটি কিন্ত তখন মাঠ ছিলো না । অপরিষ্কার জঙ্গল আর গাছে ভর্তি ছিলো । আমি তখন এই জায়গা পবা উপজেলা পরিষদের সহযোগিতায় পরিষ্কার করে মাঠ নিমার্ণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করি এবং আজকে দেখতেই পাচ্ছেন হাসপতালের সামনে মাঠ টি কত সুন্দর হয়েছে। আমাদের এই পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরকারি বিধি মোতাবেক পরিচালনা করা হয়। এখানকার চিকিৎসা সেবা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেটি নিয়ে আমি পরিকল্পনা করতে থাকি। আমি যখন এই হাসপাতালে নতুন আসি তখন এখানে রোগী খুবই কম ছিলো। তারপরে সময় যাওয়ার যাওয়ার সাথে যখন হাসপাতালারে চিকিৎসা মান ভালো হতে থাকলো তখন এখানে রোগী বাড়তে থাকলো। আমাদের এই হাসপাতাল টি মাত্র ৩১ শয্য কিন্তু আমাদের এখানে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন। তাই আমি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করছি এই হাসপাতালটি যাতে ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ করা হয়। চিকিৎসা সেবা যে শুধুমাত্র এখানেই সীমাবদ্ধ তা নয় কিন্তু। আমাদের এই পবা উপজেলায় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালনায় ৩৩ টি কমিউনিটি হাসপাতালে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পযার্য়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে হাজার হাজার দরিদ্র অসহায় মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। তাই আমি আপনাদের মাধ্যমে যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করতে চাই এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাতে ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ করা হয়”। ******** |