রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫ ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
সৃজনশীল কর্মঠ লোকদের সহায়তা
Published : Tuesday, 22 November, 2016 at 6:00 AM, Count : 531

সৃষ্টিশীল ও কর্মঠ লোক অনেক আছে আমাদের দেশে হয়তো সুযোগের অভাবে অনেক কর্মই পরিচিতি পায় না, চাপা পড়ে যায় গ্রামপর্যায়ের কিছু ক্ষুদ্র শিল্প, কুটির শিল্প বা হস্ত শিল্প- যে নামেই বলা হোক দেশ-বিদেশেও এর সুনাম ও চাহিদা ছড়িয়ে পড়ে  তেমনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ভাটপাড়া গোপালপুর গ্রামে গড়ে ওঠা কাচ শিল্প কারখানা পরিত্যক্ত টিউব লাইট সংগ্রহ করে সেগুলোকে কুপির আগুনে তাপ দিয়ে হাতের নিপুণতায় তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের শো-পিস ও শিশুদের নজরকাড়া খেলনা এসব শো-পিস ও খেলনা খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করেই গ্রামের আবদুল বেপারীর ছেলে সাহিদুল ইসলাম এগিয়ে চলছেন সফলতার দিকে

পরিত্যক্ত টিউব লাইট এই কাচ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয় এসব পরিত্যক্ত টিউব লাইট ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহের পর কুপির আগুনে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাপ দেয়ার পর মুখের বাতাসে ফুলিয়ে কখনো লম্বা, কখনো ছোট আবার কখনো বাঁকা করে তৈরি করা হয় শো-পিস আর শিশুদের নজরকাড়া খেলনা সৌন্দর্যবর্ধক হিসেবে কাচের তৈরি ফুলদানি, হাঁস, পাখি, ফটো অ্যালবাম, ঘর, শহীদ মিনার ও একুরিয়ামসহ এসব শো-পিস সামগ্রীর বেশ চাহিদা রয়েছে

কাচ শিল্প কারখানার উদ্যোক্তা সাহিদুল ইসলাম জানান, এক সময় তিনি ঢাকায় ফেরি করে শিশুদের খেলনা বিক্রি করতেন ৩ বছর আগে মাত্র ১০০ টাকা পুঁজি নিয়ে কাচের শো-পিস ও খেলনা তৈরির উদ্যোগ নেন প্রতিদিন এখানে ৩ হাজার টাকার কাচের সামগ্রী উত্পাদন করা হয় পরে সেগুলো প্যাকেটজাত করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায় এ কারখানার অর্থ দিয়ে ইতোমধ্যে তিনি জমি কিনে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছেন

তিনি আরও জানান, তার কারখানা ছোট হলেও এখানে কাজ করে এলাকার অনেক বেকার যুবক জীবিকা নির্বাহ করছেন ফলে এলাকার অনেকের দারিদ্র্যতা দূর হয়েছে কারখানায় তৈরিকৃত কাচের সামগ্রী চাহিদা অনুযায়ী উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেন

তবে পুঁজির সমস্যা থাকায় কাচ শিল্পকে বড় কারখানায় রূপান্তর করতে পারছেন না তিনি তাই সরকার এ শিল্পকে সহজ শর্তে ঋণ দিলে যেমন কারখানা বড় হবে, তেমনি এলাকার বেকার যুবকদেরও সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান স্বল্প পুঁজি, পরিবেশবান্ধব ও কম ঝুঁকিপূর্ণ এই শিল্প সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা সাহিদুল ইসলামের

কারখানার কারিগর জোব্বার ও ইয়াসিন জানান, প্রতিদিন হাতে তৈরি শো-পিস ও খেলনার ওপর নির্ভর করে মজুরি পেয়ে থাকি এখানে কাজ করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই দিন কাটছে তবে এ শিল্পের প্রসার ঘটাতে সরকারি সহায়তা দরকার

এদিকে সাহিদুলের কাচের শিল্প কারখানা দেখে একই এলাকার আইয়ুব আলী তার নিজ বাড়িতে তৈরি করছেন কাচের শো-পিস ছেলে ও স্ত্রীর সহায়তায় প্রতিদিন শত শত শো-পিস তৈরি করছেন তিনি

আইয়ুব আলী জানান, সাহিদুলের কাচের তৈরি শো-পিস দেখে তিনিও এ কাজ শেখেন পরে তিনি নিজ বাড়িতেই প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের শো-পিস তৈরি করছেন এখানকার তৈরি শো-পিসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে কাচের এ পেশায় নিজেকে যুক্ত করে আগের চেয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অনেক ভালোভাবে সংসার চলছে তার 

এ বিষয়ে গাইবান্ধা বিসিক শিল্প নগরীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মুশফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় এসব ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে সাহিদুলের উত্পাদন করা কাচের তৈরি শো-পিসের অনেক চাহিদা রয়েছে তবে সাহিদুল চাইলে তাকেসহ কর্মচারীদের প্রশিক্ষণসহ আর্থিক সহযোগিতা করা হবে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এ ব্যাপারে সহায়তার জন্য সরকারি-বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগেও এধরনের শিল্পে বিনিয়োগ কিংবা সহায়াতা দেয়া হলে এর প্রসার আরও ঘটবে

 

- মহিবুল আলম মনিক, গাইবান্ধা



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : news.bartoman@gmail.com, bartamandhaka@gmail.com