বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫ ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
সারাদেশে আমন ধানের বাম্পার ফলন
Published : Thursday, 24 November, 2016 at 6:00 AM, Count : 755

বর্তমান ডেস্ক : সারাদেশে এবার আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ধানের ফলন হয়েছে সেই সঙ্গে দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে তাই কৃষকের মাঝে আনন্দ বইছে প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর-

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম): বাংলা সন ১৪২৩ অগ্রহায়ণ মাসের মৃদু শীতের শুরুতেই আমন মৌসুমে ধানের গাছে গাছে শিশির ভেজা বাতাসে সুবাস ছড়াচ্ছে চারিদিকে মাঠের চারিদিকে সোনালি সমারোহ গত বছরের চেয়ে এবারও আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে গ্রামে-গঞ্জে নতুন ধান কাটা-মাড়াইয়ের উত্সব চলছে সর্বত্রই নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধ ধানের ফলন ও মূল্য ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুবই খুশি কৃষাণিরা গোলায় ধান তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন অধিকাংশ বাড়ির উঠান মাটির কাদার প্রলেপ দিয়ে সিদ্ধ ধান শুকানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার চলতি মৌসুমে ফটিকছড়ি উপজেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২৪০০ হেক্টর অর্জন হয়েছে ২১৮০০ হেক্টর হেক্টর প্রতি ফলন লক্ষ্যমাত্রা উচ্চ ফলনশীল জাতের ক্ষেত্রে ৩.৫০ টন চাল উত্পাদন হয়েছে ৭৬৩০০ টন চাল উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান-বিআর-১০, বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২২, বিআর-২২, বিআর-২৫, ব্রি ধান-৩০, ব্রি ধান-৩১, ব্রি ধান-৩২, ব্রি ধান-৩৯, ব্রি ধান-৪০, ব্রি ধান-৪১, ব্রি ধান-৪৯ (সর্বোচ্চ আবাদ), ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৬২ (জিঙ্ক সমৃদ্ধ জাত), অন্যান্য (দিনাজপুরী, বেনম্বার), চাক্কল, গিউস, বিন্নী, কালিজিরা ও বালামসহ অন্যান্য জাতের ধানের চাষ হয়েছে    

এ বছর রোগবালাই ও প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ার কারণে আমন ফলন ভালো হয়েছে বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষকরা

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্তমকর্তা লিটন দেব নাথ বলেন, বিভিন্ন প্রকল্প হতে ১০০ জন কৃষককে উপজেলা কৃষি অফিস হতে বিনা মূল্যে সার ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে আবহাওয়া ভালো থাকায় ও কৃষি বিভাগের সার্বিক নজরদারি ও পরামর্শের কারণে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ অত্যন্ত কম ছিল তবে ঘূর্ণিঝড় নাডা কিছুটা ক্ষতি করলেও আর কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় এবার কৃষকগণ লাভবান হবে আশা করছি

ফেনী: ফেনীতে এবার ৬৬ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে যা চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি এবার বাম্পার ফলনের আশায় স্বপ্ন বুনছেন ফেনীর কৃষকরা এদিকে ফেনীতে ধান কাটার মধ্যদিয়ে নবান্ন উত্সব শুরু হয়েছে শহরতলীর বিজয়সিংহ এলাকায় ধান কেটে এ উত্সব উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানায়, জেলায় চলতি মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে কিন্তু আবাদ হয়েছে ৬৬ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে এর মধ্যে উফশী জাতের ৫৯ হাজার ৪৯৭ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৬ হাজার ৯০৮ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে চলতি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে ফেনীতে আমনে হাইব্রিড উইনঅল ২০৭ জাতের ৫ হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল আলম রাসেল

সূত্র আরও জানায়, ফেনী সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ৬৯৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার স্থলে চাষাবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ১২৫ হেক্টর একইভাবে ফুলগাজীতে ৬ হাজার ১২৬ হেক্টরের স্থলে ৬ হাজার ১৩০ হেক্টর, পরশুরামে ৫ হাজার ৪৬৮ হেক্টরের স্থলে ৫ হাজার ৬৫০ হেক্টর ও দাগনভূঞায় ৬ হাজার ৬১৫ হেক্টরের স্থলে ৮ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে তবে সোনাগাজী উপজেলায় ২১ হাজার ৫৬ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রার স্থলে ২০ হাজার ৮৫০ হেক্টর আবাদ হয়েছে ছাগলনাইয়া উপজেলায় ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে এ আবাদ থেকে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৪৮৪ টন চাল উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ

তবে গত আমন মৌসুমে ফেনীতে বিআর ১১ ও ৪৯ জাতের আবাদ বেশি হলেও এবার বন্যার কারণে বিআর ২২ ও ২৩ জাতের ধান বেশি আবাদ হয়েছে

শেরপুর: অনুকূল আবহাওয়া আর স্থানীয় কৃষি বিভাগের আগাম সুষ্ঠু তদারকির কারণে এবার রোপা-আমনে বাম্পার ফলনের আশা করছেন শেরপুরের কৃষক ও কৃষি বিভাগ পাশাপাশি ধানের বাজারমূল্য সন্তোষজনক হওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে লেগেছে আনন্দের ছাপ

স্থানীয় কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, এ বছর রোপা-আমন মৌসুমে এ জেলায় মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮৯ হাজার ৪৩২ হেক্টর জমি যার বিপরীতে কিছুটা কমে ৮৯ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন চাষ হয়েছে আর উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার টন এক্ষেত্রে উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ লাখ ২০ হাজার টন ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে কৃষি বিভাগ কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর আমন মৌসুমে জেলায় হাইব্রিড জাতের ধানী গোল্ড, উফশী জাতের বিনা ধান-, বিনা ধান-১১, ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান-৫২, পাইজাম এবং স্থানীয় জাতের চিনিশাইল, তুলসীমালা, বিভিন্ন ধরনের বিন্নি, বাইশমুঠি, বিরই, কালিজিরা ইত্যাদি প্রভৃতির ধানের আবাদ হয়েছে এছাড়াও উচ্চ ফলনশীল হরি ধানের আবাদও করেছেন অনেকেই

শহরের গরুহাটি মহল্লার স্থানীয় আড়তদার রঞ্জু মিয়া জানান, মোটা ধানের বাজারমূল্য শুরু থেকেই সন্তোষজনক উপরন্তু সময় গড়িয়ে গত কয়েকদিনে ধানের বাজার মূল্য উর্ধ্বগতির দিকে বর্তমানে প্রতিমণ মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত একদিকে বাম্পার ফলন আর অন্যদিকে ন্যায্য মূল্য পেয়ে এবার বেশ খুশি শেরপুরের কৃষকরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন জানান, এ বছর আমন ধান রোপণে জমির লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কম হলেও অনুকূল আবহাওয়া আর কৃষি কর্মকর্তাদের আগাম তদারকির কারণে উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পোকা-মাকড়ের আক্রমণও ছিল না



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক ও প্রকাশক: আলহাজ্ব মিজানুর রহমান, উপদেষ্টা সম্পাদক: এ. কে. এম জায়েদ হোসেন খান, নির্বাহী সম্পাদক: নাজমূল হক সরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মুন গ্রুপ, লেভেল-১৭, সানমুন স্টার টাওয়ার ৩৭ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত।, ফোন: ০২-৯৫৮৪১২৪-৫, ফ্যাক্স: ৯৫৮৪১২৩
ওয়েবসাইট : www.dailybartoman.com ই-মেইল : news.bartoman@gmail.com, bartamandhaka@gmail.com